• ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বাড়ি না স্বর্গ !

sylhetsurma.com
প্রকাশিত আগস্ট ২৫, ২০১৬

ফয়সল আহমদ মুন্না :::  স্বর্গের বিবরণ মানুষ শুনেছে। কোনোদিন দেখেনি। না দেখলেও স্বর্গের একটি মনছবি প্রতিটি মানুষেরই মস্তিষ্কে রয়েছে। মনছবির এই কল্পনা ঘিরে পৃথিবীতেও অনেকে স্বর্গ তৈরির চেষ্টা করেছেন। সেরকমই একটি মনছবির বাস্তব রূপ এখন তালিকাভুক্ত হয়েছে সিলেটের হৃৎ ঐতিহ্যে। কাজী প্যালেস। প্রাসাদসম এই বাড়িটি এখন সিলেটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সম্রাট শাহজাহান তাজমহল তৈরি করে দুনিয়াব্যাপী যে হই-হুল্লোড় সৃষ্টি করেছিলেন সিলেটের কৃতি সন্তান মাহতাবুর রহমান নাসিরও কাজী প্যালেস নির্মাণ করে দেশব্যাপী আলোড়ন তৈরি করেছেন। নির্মাণশৈলী দেখে মুগ্ধতার পাশাপাশি এই বাড়ির নির্মাণ ব্যয় দেখে সিলেটের মানুষের কৌতুহলের অন্ত নেই। প্রায় ৮ একর জায়গার উপর নির্মিত এই বাড়ির ছাদে আছে হেলিপ্যাড, আছে সুইমিং পুল, স্টিম বাথ, লিফট সহ আধুনিক ¯œানাগার। ২৯টি মাস্টার বেডের ডিজাইন করা হয়েছে ২৯টি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আলোকে। সিলেটের কৃতিসন্তান প্রথিতযশা ব্যবসায়ী মাহতাবুর রহমান একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে এমনিতেই দেশ বিদেশে আলোচিত। এবার তিনি আলোচনায় ভিন্ন কারণে। তার নির্মিত বাড়িটি এখন সিলেটের মানুষের আলোচনার বিষয়বস্তু। এই বাড়ির 04চোখধাঁধানো নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করছে মানুষকে। সম্প্রতি তিনি এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৮ সালে সিলেটের ইসলামপুর এলাকায় তিনতলাবিশিষ্ট এই বাড়ির কাজ শুরু করা হয়। এই বাড়ির কাজে প্রকৌশলী ছিলেন দুবাই, ফ্রান্স, লেবানন ও জার্মানির খ্যাতনামা বিভিন্ন কোম্পানীর। ঘরে নির্মাণশৈলীর অনেক উপকরণ এবং আসবাবপত্র আনা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে। ভিতরের বিভিন্ন ইনটোরিয়র দেখে চোখধাঁধাবে অনেকের। বিগত ৮ বছর প্রতিদিন গড়ে আড়াইশ’ মানুষ একনাগাড়ে নিয়োজিত ছিলেন এই বাড়ির নির্মাণকাজে। তিন তলা এই ভবনে বিল্ডিং জোন প্রায় ৮০ হাজার স্কয়ার ফুট। প্রায় ৫ হাজার মানুষের অনুষ্ঠান বাড়িতে করার বন্দোবস্ত আছে। পারিবারিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা কক্ষ। ২৯টি মাস্টার বেডের ডিজাইন করা হয়েছে ২৯টি দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আলোকে। শুধু নিচতলায় রয়েছে ৯টি ডাইনিং। আছে দুইটি লিফট। আভিজাত্যময় ইতালিয়ান ওয়ান প্লেট মার্বেলের আধিক্য পুরো বাড়িজুড়ে। সৌদি আরবের ওয়াকফ মিনিস্ট্রির উপহার দেওয়া পবিত্র কাবাশরীফের দরজার রেপ্লিকাও রাখা হয়েছে যতœ করে। 02কেউ বলছেন কাজী ক্যাসল নামের এই প্রাসাদসম এই বাড়ির নির্মাণব্যয় দুইশ কোটি টাকা কেউবা তিনশ কোটি। তবে এই রহস্যের জট খুলল মাহতাবুর রহমান নাসেরের উত্তরে। ঠিক কত টাকা এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে তা খাতা-কলমে হিসেব করেননি নাসির। তবে স্বপ্নের এই বাড়ি নির্মাণে দু’হাত খুলে ব্যয় করেছেন। তিনি বলেন, এর নির্মাণ ব্যয় পাঁচশ’ কোটি টাকারও কাছে চলে যেতে পারে। কেনো এমন বাড়িÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে হাস্যোজ্জ্বল নাসির বলেন, লোকদেখানো নয়, একান্নবর্তী পরিবারের সবাইকে এক বাড়িতে নিয়ে আসার উদ্দেশ্যেই এই বাড়ি নির্মাণ। স্বনামধন্য ব্যবসায়ী মাহতাবুর রহমান বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড আল হারমাইন পারফিউমস্ গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মাহতাবুর রহমান বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক উপর্যুপরি তিনবার (২০১২-১৩, ২০১৩-১৪ এবং ২০১৪-১৫) সিআইপি নির্বাচিত হন। তিনি ২০১৩ ও ১৪ সালে বাংলাদেশে সর্বাধিক রেমিট্যান্স প্রেরণের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন।01