• ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ, ‘ইন্ধনের’ দায়ে এসআই বরখাস্ত

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ১৯, ২০১৬

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
বাহুবল  সংবাদদাতা :
বুধবার হবিগঞ্জের বাহুবলে পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ২২ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে বাহুবল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে।  এছাড়া ঘটনার তদন্তের জন্য সহকারী পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) সুদীপ্ত রায়কে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,  বুধবার দুপুরে বাহুবল দীননাথ মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীরা  বিদ্যালয় জাতীয়করণ সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামছুন্নাহার পারভীনের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অফিস ঘেরাও করে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচি পালন শেষে স্কুলে ফেরার পথে বাহুবল থানার এসআই দেলোয়ারের সঙ্গে এক ছাত্রের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দেলোয়ার স্কুলের দুই শিক্ষককে থানায় ধরে নিয়ে গেলে উত্তেজিত ছাত্ররা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উত্তেজিত ছাত্ররা থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গ্লাস ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্রসহ পাঁচ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে সিলেট ও চার জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। এক ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। বিকেলে থানায় ছুটে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মনিম চৌধুরী বাবু, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই। এ সময় তারা থানা প্রাঙ্গনে বসানো সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেন। আটক শিক্ষকদের ছেড়ে দিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাকে অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন বাহুবল থানার ওসি মনিরুজ্জামান।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র বলেন, এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানার এসআই দেলোয়ারের ইন্ধন পাওয়া গেছে। যে কারণে তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুদীপ্ত রায়কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটে, কারা এতে জড়িত তা তদন্তে বের হয়ে আসবে।
তিনি বলেন, এ ঘটনার অন্য কোনও পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বিষয়টি নিয়ে আগামী ২৬ অক্টোবর বসা হবে। সেদিন এর সমাধান করা হবে। এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই আর কোনও ধরনের বাড়াবাড়ি করা হবে না। আর আহত ছাত্রদের উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষে বিষয়টি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এর সমাধানের জন্য আমরা সমঝোতায় এসেছি।
বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ঘটনার পর ১৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
“গুরুতর আহত পথচারী আবদুল মতিনকে (৫৫) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তিনজনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি আরও তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।