• ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

কলেজছাত্রী ঝুমাকে উত্যক্ত করে আসছে বাহার

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ১৭, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: প্রায় বছর তিনেক ধরে জকিগঞ্জের কলেজছাত্রী ঝুমা বেগমকে উত্যক্ত করে আসছে একই এলাকার ইলেকট্রিক মিস্ত্রী বাহার উদ্দিন। ঝুমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেয় সে। এতে রাজী না হওয়ায় রোববার দুপুরে প্রকাশ্য ঝুমাকে কুপিয়ে আহত করে বাহার।   হামলার শিকার ঝুমা, তাঁর আত্মীয়স্বজন ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা এমনটি জানিয়েছেন।   আহত ঝুমা ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হামলাকারী বাহারউদ্দিনকে এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ।  এরআগে গত ৩ অক্টোবর সিলেট নগরীর এমসি কলেজে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করা হয় কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসকে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম তাকে কুপিয়ে আহত করে। দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় ওঠা খাদিজার উপর হামলার ঘটনার রেশ না কাটতেই প্রায় একই কারণে সিলেটের আরেক কলেজ ছাত্রীর উপর হামলার ঘটনা ঘটলো।  ঝুমা বেগম জকিগঞ্জের ইছামতি ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ও উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মুসলিম উদ্দিনের মেয়ে। আর বখাটে বাহার একই এলাকার আবদুল গফুর পচনের ছেলে।  ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঝুমা বেগম বলেন, গত বছর দেড়েক ধরে তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে নানাভাবে বিরক্ত করে আসছিলেন বাহার উদ্দিন। কিন্তু তিনি বাহারের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়  (রোববার) তাঁর উপর হামলা চালায় সে। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁর মায়ের উপরও হামলা চালানো হয়।  ঝুমার মা করিমা বেগম বলেন, সকালে ছোট ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করতে ঝুমাকে নিয়ে বের হন তিনি। পথে একই গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে বাহার উদ্দিন (২২) গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঝুমাকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। বাহার তিন বছর ধরে ঝুমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি বিয়ের প্রস্তাব দিলে ঝুমা রাজি না হওয়ায় প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুরে ছোট ভাইকে স্কুলে ভর্তি করাতে নিয়ে যাওয়ায় পথে কালীগঞ্জ বাজার এলাকায় সুরমা নদীর তীরে ঝুমার ওপর হামলা চালায় বাহার। সে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। মেয়ের এ অবস্থা দেখে মা করিমা বেগম বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও জখম করা হয়। মা ও মেয়ের চিৎকারে পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ বাজার থেকে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল কাদিরসহ অন্যরা এগিয়ে এলে বাহার পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত ঝুমা বেগমকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই কলেজছাত্রীর জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি বর্তমানে ওই হাসপাতালের চতুর্থ তলার চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসুদ হোসেন বলেন, ঝুমার বাঁ হাতে ও পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। তার হাতে ১৯টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। মা করিমা বেগমকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঝুমার চাচাতো ভাই আবদুল হাছিব বলেন, বাহার অনেক দিন ধরে ঝুমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। মানিকপুর ইউপি সদস্য আবদুল কাদির বলেন, বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বাহার প্রকাশ্যে ঝুমাকে কুপিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রামে সালিশও হয়েছে। সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা বলেন, বাহার নামের এক বখাটে ছেলে কলেজছাত্রীকে কুপিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তাকে ধরার জন্য চেষ্টা চলছে।