• ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বিজ্ঞানের ব্যবহার গবেষণা ও চর্চা বাড়াতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মার্চ ১৭, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে তার সরকার শিক্ষা, গবেষণা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ যদি গড়তে চাই তাহলে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে শিক্ষার পাশাপাশি প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো, গবেষণা বাড়ানো এবং বিজ্ঞানের চর্চা বৃদ্ধি করা।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা বায়ো-টেকনোলজিক্যাল সায়েন্স, মেডিকেল সায়েন্স, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপলায়েড সায়েন্স এবং খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনে গুরুত্ব প্রদান করেছি। যে কারণে আমরা আমরা আজ খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত দেশ, মৎস উৎপাদনে (মিঠা পানির মাছ) উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে রয়েছি। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় এবং মাংসসহ অন্যান্য উৎপাদনেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এসব উন্নয়নগুলো এমনিতেই হয়নি, আমি বলবো সবই বিজ্ঞানের অবদান, গবেষণার অবদান।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ ও বিশেষ অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আফম রুহুল হক। বিজ্ঞান ও প্রযুুক্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সিরাজুল হক খান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। এ বছর ১৭০২ জন শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই সকলে এই গবেষণার কাজ আরো মনযোগের সাথে করবেন। যারা সত্যিই গবেষণা করে কোন ফলাফল জাতিকে দিতে পারবেন তাদের জন্য আমাদের চিন্তা-চেতনাতেই আছে আরো বেশি সহযোগিতা করে যাওয়া। আমরা তা করে যাব। আমাদের সীমিত সম্পদ এটা ঠিক। কিন্তু আমি মনে করি, পরিকল্পিতভাবে সীমিত সম্পদ যদি আমরা ব্যবহার করতে পারি এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে এটার ব্যবহার যদি নিশ্চিত করতে পারি তাহলে আমাদের কারো মুখাপেক্ষী হয়ে চলতে হবে না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে মাথা উঁচু করে বিশ্বসভায় এগিয়ে যাব। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি লক্ষ্য স্থির না থাকলে দেশ উন্নত হতে পারে না। ২০০১ সালে যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করবো, ওই সময়ের মধ্যে আমরা দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ২০১৪ সালে যে নির্বাচনী ইস্তেহার দিয়েছিলাম সেখানে আমরা ঘোষণা করেছিলাম—২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। আমরা ইতোমধ্যে পরমাণু যুগে প্রবেশ করেছি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্পটি বহুকাল ধরে অবহেলিত ছিল, কিছুতেই কাজে লাগানো যাচ্ছিল না, এখন সেখানে আমরা পা দিচ্ছি। এজন্য আমাদের প্রচুর বিজ্ঞানী দরকার। পরমাণু শক্তি কেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য পরমাণু জ্ঞানসম্পন্ন বিজ্ঞানীদের আমাদের দরকার হবে। এজন্য প্রশিক্ষণও দরকার, এই কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা যেন এই বিজ্ঞান শিক্ষার দিকে ভবিষ্যতে এগিয়ে আসে। তারাই এগুলো পরিচালনা করতে পারবে। সেদিকে আমরা দৃষ্টি দিতে চাচ্ছি। ন্যানো টেকনোলজি এখন এসেছে, সেটাও আমাদের চিকিৎসা সেবা থেকে শুরু করে বহুকাজে এর ব্যবহার হয়। কাজেই সেদিকেও আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি এবং সেটা কতটা ব্যবহার করা যায় ও কাজে লাগানো যায় তা অবশই আামরা দেখবো। আমরা বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। এ সময় জাতির পিতার সমুদ্রসীমানা আইন এবং সীমানা চুক্তি করার প্রসংগ উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা দেশ স্বাধীনের পর মাত্র ৯ মাসে একটা সংবিধান উপহার দিয়ে নাগরিকদের জন্য সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করেন। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার ফাঁকে ভবিষ্যতে প্রতিবেশির সঙ্গে যেসব বিষয়ে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে তিনি সেসব চুক্তিও সম্পাদন করে যান।
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বিশ্বব্যাপী একটি নতুন উপসর্গ শুরু হয়েছে—জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং মাদকাসক্তি। এর বিরুদ্ধে সকলকে জনমত সৃষ্টি করার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী, শুধু দেশে নয়, যারা বিদেশে লেখাপড়া করছে তারাও মেধার দৃষ্টান্ত রাখছে। কাজেই এরা যেন কেউ বিপথে না যায়। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের সঙ্গে যেন না জড়ায় সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেয়ার জন্য আমি শিক্ষক, অভিভাবক থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।