• ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পুলিশের খাতায় স্কুল ছাত্র জুয়াড়ী

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মার্চ ২৪, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক : সৈকত দাস হৃদয়, বয়স ১৭, সে সিলেট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র । যেখানে হৃদয় স্কুলের বই খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেখানে আজ সে কারাগারের অন্ধকুঠিরে করছে বসবাস। হৃদয়ের অপরাধ কি ছিল?  হৃদয়ের মমতাময়ী মায়ের করূন কন্ঠে ভেসে উঠলো হৃদয়ের সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাংখিত ঘটনার বিবরণ। হৃদয় দক্ষিণ সুরমার রেলওয়ে কলোনীর কানাই লাল দাসের ছেলে । মা মনি রাণী দাস কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন,তার ছেলে কোনো অপরাধী নয়। অথচ সে পুলিশের খাতায় অপরাধী। পুলিশের পায়ে ধরেও নিস্তার পাননি তিনি। পুলিশ কিশোর হৃদয়কে জুয়াড়ীদের সাথে আসামী বানিয়ে আদালতের মাধ্যমে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে। হৃদয় এখন জেলে। আর তার মায়ের চোখ দিয়ে বের হচ্ছে জল।

হৃদয়ের সাথে কি হয়েছিল : গত ১৭ মার্চ শুক্রবার দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে বাবনাস্থ কাশেমের ভাঙারী ঘর ও টেকনিক্যাল সড়কের আল সামস্ কমিউনিটি সেন্টারের পেছনে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ভারতীয় তীর খেলার দায়ে ২৩ জনকে আটক করা হয়। আটক ২৩ জনের মধ্যে ২০ জনকে থানা লকাপে ঢুকানো হয়। বাইরে রাখা হয় অপর ৩ জনকে। লকাপে আটক থাকা ২০ জনের মধ্যে ছিল হতভাগা হৃদয়(১৭)। লকাপের ভেতর থেকে পুলিশের উদ্দেশ্যে হৃদয় বার বার বলেছিল ‘সে অপরাধী নয়,আমি স্কুল ছাত্র,আমি এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি,এখন আমার ২ মাসের ট্রেনিং চলছে,ট্রেনিং এ অনুপস্থিত থাকলে আমার ভবিষৎ অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত হবে, আমাকে ছেড়ে দিন, আমি বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট খেলতে এসেছিলাম,জুয়া খেলার সাথে আমি জড়িত নই’  হৃদয়ের এসব কথা পুলিশের কানে গেলেও তাতে তারা কর্ণপাত করেনি, পাঠিয়ে দেয় কারাগারে।
হৃদয়ের মা মনি রাণী দাস থানায় গিয়ে ওসির পায়ে ধরে অশ্রুসিক্ত নয়নে ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও ওসি তা শুনেননি। উল্টো ওসি বলেন,একটু আগে আসলেন না কেনো ? আর আপনার ছেলে ঘটনাস্থলে কি করছিল। তখন মনি রাণী দাস বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো দিনই কোনো অপরাধমুলক কাজে জড়িত ছিলনা, তীর খেলার টাকা পাবে কোথায়,আমার ছেলে ক্রিকেট খেলা থেকে বাবনা হয়ে বাসায় আসছিল,তখন আপনারা আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে এসেছেন,কোনো যাচাই বাচাই না করে তাকে আপনারা জোয়াড়ী বানিয়ে দিলেন’। মনি রাণী দাসের আর কোনো কথাই শুনেননি ওসি । বর্তমানে হৃদয় কারাগারে আটক রয়েছে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন,যারা মদ খায়,জুয়া খেলে বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকে তাদের আটক করে  আদালতে চালান দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। আদালত কি রায় দিলো,সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। আমি সেদিন ২০ জুয়াড়ীকে আটক করি। আর ভ্রাম্যমান আদালত ঐ ২০ জুয়াড়ীকে ২৯ দিনের কারাদন্ড দেন। এখানে আমার কিছু করার ছিল না। (তথ্য সূত্র-দৈনিক যুগভেরী ও সিলেট ইউকে নিউজ ২৪ ডটকম)