• ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ফতোয়াবাজদের কবল থেকে রেহাই পেতে চান প্রবাসী আব্দুন নূর

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জুলাই ৮, ২০১৭

প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন। দেশমাতৃকার টানে প্রবাসীরা দেশের মাটি ও মানুষের সংস্পর্ষে কিছুদিন থেকে আত্মতৃপ্তি পান। কিন্তু দেশে প্রবাসীদের সম্পত্তি রক্ষা করা কঠিন। দেশে এসে দেখা যায় সম্পত্তি আত্মসাত চাঁদাবাজির শিকার হতে হয় তাহলে প্রবাসীদের আসার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এমনি নিজ সম্পদ রক্ষা, বিভিন্ন মামলা ও ফতোয়াবাজি থেকে রেহাই পেতে প্রশাসনসহ সচেতন মহলের সহযোগিতা কামনা করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুন নূর।
শনিবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ রকম অভিযোগ তোলে ধরেন বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চিগাঁও ইউনিয়নের মিরগাঁও এলাকার মৃত ইন্তাজ আলীর ছেলে আব্দুল নূর।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুন নূর বলেন, দেশের গ্রামের বাড়িতে পৈত্রিকভাবে ও আমাদের উপার্জিত প্রায় ২৫ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। এসব দেখাশুনা করেন একমাত্র দেশে অবস্থানরত আমার বোন শরিফা খাতুন। আমরা বাড়িতে না থাকায় আমাদের এই সম্পদের উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে একই গ্রামের একটি চাঁদাবাজ চক্রের। তাদেও মধ্যে একই এলাকার মৃত আব্দুল বারির ছেলে শাইস্তা, মসদ্দর আলীর ছেলে ফারুক উল্লেখযোগ্য। গত দুই মাস থেকে তাদের ভয়ে বাড়িতে থাকা আমার বোন ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। প্রবাস থেকে এসে তাদের ভয়ে বাড়িতে না থেকে সিলেট শহরে বসবাস করছি। জোর পূর্বক তারা বাড়িঘরসহ আমার সকল সম্পত্তি দখল নিতে চায়। ঘর তালাবদ্ধ করে গবাদি পশু, পুকুরের মাছ লুটপাট, গাছপালা কর্তন ও ফসলাদি বিনষ্ট করেছে। তাদের এ দুস্কর্মকে জায়েজ করতে আমার বিরুদ্ধে নাস্তিকতার অপবাদ দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। শুধু তা-ই নয় মসজিদে তালা দেয়ার মিথ্যা গল্প সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে ওই চক্র। অথচ আমার পরিবার এবং আমি ধর্মপ্রাণ মুসলমান। যার প্রমাণ এই মসজিদ আমার অনুদানে নির্মিত এবং গ্রামের মাদরাসায়ও আমার অনুদান রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে এতসব জুলুম নির্যাতনের পরও স্থানীয় পুলিশের কোনো সহযোগিতা পাইনি। প্রভাবশালী এই চক্র স্থানীয় পুলিশকে কুক্ষিগত করে রেখেছে।
তিনি বলেন, এলাকায় চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত শাইস্তা, ফারুক, উমরাহ মিয়ার পুত্র আবু তাহের নজির, মনির মিয়ার পুত্র আখতার মিয়া, বশির মিয়ার পুত্র লিলু মিয়াসহ একটি চক্র আমার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। নিরুপায় হয়ে এদের মধ্যে আবু তাহের নজিরকে চেকের মাধ্যমে আমি ৬০ হাজার টাকা দেই। কিন্তু এতে তারা শান্ত না হয়ে আরো টাকা চায়। টাকা না দেয়ায় গত ২৩ ও ২৪ মে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে নগদ টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার সাথে সাথে আমি বিশ্বনাথ থানায় ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। পরে এ ব্যাপারে মামলা দিতে চাইলে থানার ওসি মামলা না নিয়ে বিষয়টি আপোষ করার জন্য আমাকে চাপ দেন। এই চক্র তাদের অপকর্ম ঢাকতে ও আমার সম্পত্তি আত্মসাত করতে আমার বিরুদ্ধে মসজিদে তালা দেয়ার অপপ্রচার চালায় এবং আমাকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করে মানববন্ধনের আয়োজন করে।
উল্লেখিত শাইস্তা ও ফারুকের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলাসহ অনেক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলার নম্বর হলো জিআর ৬৮/১২, ৬৯/১২, ৭০/১২, ৭১/১২ ও ৭২/১২। তারা ২৬ মে অপপ্রচার চালায় আমি মসজিদে তালা মেরে রেখেছি। এট সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অথচ ২৪ ও ২৫ মে আমি মসজিদে বিদ্যুৎ না থাকায় মুসল্লিদের মসজিদে নামাজ পড়তে অসুবিধা হওয়ায় বিদ্যুৎ অফিসে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে বিদ্যুৎ অফিসের লোক পাটিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করি। আমার মোবাইলের কললিস্ট গাটলে বিদ্যুৎ অফিস কর্মকর্তার নম্বারে কথা বলার প্রমাণ পাওয়া যাবে। আমি কখনও মসজিদে তালা দেইনি। শুধুমাত্র আমাকে হেনস্থার মধ্য দিয়ে বাড়িছাড়া করে সম্পত্তি গ্রাস করতে তারা এই কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
আমার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে নিজ গ্রামসহ অন্যান্য গ্রামে ১২টি হতদরিদ্র পরিবারকে পাকাঘর নির্মাণ করে দেয়া। এর মধ্যে মিরগাঁওয়ের চেরাগ আলী, আব্দুন নূর, সুহেল, ইশাদ আলী, আব্দুল মজিদসহ ১২টির পরিবারের ঘর নির্মাণে প্রত্যেক ঘরে ৫ লাখ টাকা করে ব্যয় করেছি। এছাড়াও প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নিজস্ব ভূমিতে মিররগাঁও জামে মসজিদ নির্মাণ ও মিররগাঁও মাদরাসার উন্নয়নে ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছি। প্রেস- বিজ্ঞপ্তি