• ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

‘বঙ্গমাতা, দিয়েছো প্রেরণা, জেগেছি আমরা’ প্রামাণ্য গ্রন্থ প্রকাশিত

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ৮, ২০১৭

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্মরণে জাতীয় মহিলা সংস্থা প্রকাশ করেছে ‘বঙ্গমাতা, দিয়েছো প্রেরণা, জেগেছি আমরা’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ।
গ্রন্থটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানাসহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের পনেরজন লেখকের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছার জীবন, কর্ম, অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যবহুল লেখা রয়েছে। রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর পরিবার, তাঁর রাজনৈতিক জীবন ও কর্মে ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদান নিয়ে নানা ঘটনার বিবরণ। এতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির বাণী প্রকাশ করা হয়েছে।
গ্রন্থে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী হিসেবে ফজিলাতুন নেছা মুজিব আমৃত্যু স্বামীর পাশে থেকে দেশ ও জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তিনি দলকে মূল্যবান পরামর্শ দিতেন ও সহযোগিতা করতেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝেও তিনি অসীম ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতা তাঁকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা আমার মা’ শীর্ষক দীর্ঘ লেখাটিতে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে বঙ্গমাতা বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে কিভাবে সহযোগিতা করেছেন, পঞ্চাশ, ষাট দশকে বিভিন্ন আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধুকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার, স্বাধীনতা ঘোষণার সময়, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বঙ্গমাতার সহযোগিতা এবং কর্মময় জীবন তুলে ধরেন। তিনি বলেন ‘আমার মায়ের যে অবদান রয়েছে দেশের স্বাধীনতার জন্য এবং দেশকে যে গভীরভাবে ভালবাসতেন এ দেশের মানুষ আব্বার সঙ্গে একই স্বপ্নই দেখতেন যে, এ দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে, ভালোভাবে বাঁচবে।’
শেখ রেহানা তার ‘একজন আদর্শ মায়ের প্রতিকৃতি’ লেখাটিতে বলেন, ‘আমার মা ছিলেন আমাদের পরিবারের প্রাণ, একজন আদর্শময়ী অভিভাবক। আমার বাবা দেশ, রাজনীতি ও প্রিয় জনগণকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন এবং তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতেন। এ জন্য তাঁকে জেলে যেতে হয়েছে। একটার পর একটা মামলা দিয়ে মানসিক নির্যাতন করেছে। দু:সহ কারাজীবনের যাতনা সহ্য করতে হয়েছে। কখনো কখনো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিন্তু আমার মা’র ছিল প্রচ্ছন্ন দৃষ্টি। পেছনে থেকে সাহস ও শক্তি যুগিয়েছেন। তাঁর স্বপ্ন লক্ষ্য পূরণে তিনিও তাঁর চিন্তা-ভাবনার সঙ্গী হয়েছেন।’
লেখককদের তালিকায় আরও রয়েছেন, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, ড. নীলিমা ইব্রাহিম, বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, নাছিমা বেগম এনডিসি, কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন, ড.আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ড. শামসুজ্জামান খান, অধ্যাপক মমতাজ বেগম এডভোকেট, অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, ড. হারুন অর রশিদ, ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ড. ফেরদৌসী বেগম।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী তাঁর শেখ ফজিলাতুন নেছা’ শীর্ষক লেখায় বলেন ‘তিনি সর্বদা স্বামীকে সাহস, মনোবল, প্রেরণা যুগিয়েছেন, শক্তি দিয়েছেন। তাই তো বাংলার মানুষ পেয়েছে আজ স্বাধীন বাংলাদেশ। আমি দৃঢভাবে বিশ্বাস করি, শেখ মুজিবের জন্ম না হলে আমরা আজও পরাধীন থাকতাম। কিন্তু তাঁর দাম্পত্য জীবনে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের মতো এম ধীরস্থির, সর্বংসহা, বুদ্ধিমতী, দূরদর্শী ও স্বামীঅন্তপ্রাণ নারীর আবির্ভাব না হলে শেখ মুজিব বঙ্গশার্দুল, বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালিসহ সকল ক্ষেত্রেই ঘাটতি থাকতো। ’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জাতীয় মহিলা সংস্থা’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি গ্রন্থটি প্রকাশের ক্ষেত্রে সহায়তা করে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থটির প্রকাশনা কমিটির আহবায়ক হচ্ছেন জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাহানারা পারভিন এবং সদস্য হচ্ছেন ড. আবুল হোসেন ও শিশু একাডেমীর পরিচালক শিশু সাহিত্যক আনজির লিটন। মনোরম এই প্রকাশনাটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী মাসুক হেলাল। (বাসস)