• ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

বিশ্বনাথে প্রবাসীর তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী-সন্তানদের পুজি করে সম্পত্তি দখল করে রেখেছে একটি চক্র

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৬, ২০১৭

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের কাজীর গাঁও গ্রামের লন্ডন প্রবাসী মৃত ওয়াহাব আলীর তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী ও তার সন্তানদের পুজি করে ওই প্রবাসীর বিশাল সম্পতি দখল করে রেখেছে গ্রামের একটি চক্র। চাঁদাবাজ ও বিভিন্ন মামলার আসামী ওই চক্রের সদস্যদের কারণে প্রবাসী পরিবারের লোকজন বাড়ি আসতে পারছেন না। বাড়ি ও হাওরের জায়গা জমি তারা দখল করে রেখেছে। বুধবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ওয়াহাব আলীর ছেলে লন্ডন প্রবাসী কলমদর আলী। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন আত্মীয় জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী আলেয়া বিবি, দুই সন্তান শাহানারা বেগম ও ইউসুফ আলীকে ফুসলিয়ে গ্রামের আছকির মিয়া, তোতা মিয়া, কাছা মিয়া, আগুর মিয়া, হোশিয়ার আলী, কলমদর আলী, আতিক আলী, মবউল্লাহ, ছুরত মিয়া, তছির আলী, আমির আলী, নূর মিয়া, লাল মিয়া, ওয়াহাব আলীর সম্পত্তি জোর করে দখল করে আছে।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ওয়াহাব আলীর ১ম স্ত্রী নছিরা বিবি, ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ডে বসবাস করতেন। তিনি শেষ বয়সে বাংলাদেশে চলে আসেন। ওই সময় একটি মহল প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই ১৯৯৪ সালের ৫ মে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ গ্রামের মহবত উল্লার মেয়ে আলেয়ার সাথে দ্বিতীয় বিবাহ করিয়ে দেয়। আলেয়া ২০-০৩-১৯৯৫ তারিখে শাহানারা বেগম ও ০৫-০৩-২০০০ তারিখে মো. ইউসুফ আলী নামে সন্তানের জন্ম দেন। তাদের পিতা ওয়াহাব আলী ব্রিটিশ সিটিজেন হওয়ায় তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে যুক্তরাজ্যে নিতে ভিসার আবেদন করেন। কিন্তু দুই সন্তান ওয়াহাব আলীর ঔরষজাত কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ পরীক্ষার নিদের্শ দেন কর্তৃপক্ষ। ২৩-০৩-২০০২ সালে ওয়াহাব আলী ২য় স্ত্রী আলেয়া বেগম এবং তাদের সন্তান শাহনারা ও ইউসুফ আলীর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ইংল্যান্ডের সেলমার্ক ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে প্রেরণ করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় দুই সন্তানের সাথে তাদের মায়ের রিলেশনশিফ রয়েছে এবং পিতা ওয়াহাব আলীর সাথে কোন রিলেশনশিপ নেই বলে উল্লেখ করা হয়। ফলে ভিসা আবেদন বাতিল করা হয়। এ নিয়ে ওয়াহাব আলী নাখোশ হন ও কোন আপীল বা আপত্তি প্রদান করেননি।
বক্তব্যে বলা হয়, উক্ত পরিস্থিতে ওয়াহাব আলীর গত ১৫-০৮-২০০২ ইং তারিখে দ্বিতীয় স্ত্রী আলেয়া বেগমকে তালাক প্রদান করেন এবং তালাকের নোটিশ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কার্যালয়ের মাধ্যমে জারী হয়। গত ০২/১২/২০০২ তারিখে সালিশ বোর্ডের মাধ্যমে চেয়ারম্যান কর্তৃক উক্ত তালাক নামা অনুমোদন হয়। আলেয়া বেগমকে ও তার দুই সন্তানকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে সব বিষয় মিটমাট করা হয়। এ অবস্থায় ৭/১১/২০১০ সালে ওয়াহাব আলী মৃত্যু বরণ করেন। তার ছেলে কলমদর আলী পিতার সমস্ত স্থাবর সম্পত্তি নামজারী করার জন্য বিশ্বনাথ ভ’মি অফিসে মোকদ্দমা করেন। তা জানার পর শাহানারা বেগম ও মোঃ ইউসুফ আলী উত্তরাধিকা দাবি করেন। ইউনিয়ন পরিষদের উত্তরাধিকারী সনদপত্রেও ভিন্নতা রয়েছে।
বক্তব্যে বলা হয়, শাহানারা বেগম ও মো ইউসূফ আলী মৃত ওয়াহাব আলী ঔরষজাত নয় দাবি করে কলমদর আলী সিনিয়র সহকারী জজ্ বিশ্বনাথ আদালত, সিলেটে স্বত্ব মোকদ্দমা (নং- ৪৩/২০১৭) করেন। যা বিচারাধীন আছে। আদালতের নির্দেশে ইতোমধ্যে পিবিআই প্রতিবেদন দাখির করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রামের ওই চক্র ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে গ্রামের মিরাশ আলীসহ বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করেছে। সুষ্টু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন ও সম্পত্তি উদ্ধারের আইনানুগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আরজু মিয়া, মনু মিয়া, হাবিজ মিয়া, শামীম আহমদ, মিরাশ আলী, আহমদ আলী, জাহাঙ্গির আলম, ডালিম খান, হাছন আলী, বক্কর মিয়া, আহাদ আলী বাবু, আমির আলী, ইরন মিয়া, রাকিব আলী, সিরাজুল ইসলাম, সুজন মিয়া, গিয়াস উদ্দিন, সারজান মিয়া, মানিক মিয়া, আহমদ আলী প্রমুখ। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি।