• ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ষড়যন্ত্রমুলক মাদক মামলায় আমার বাবা-ভাইকে ফাঁসানো হয়েছে : কন্ঠশিল্পী রুহী

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮

সংবাদ সম্মেলন

ষড়যন্ত্রমুলকভাবে মাদক মামলায় বাবা ও ভাইকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট নগরীর ১০নং ওয়ার্ডের ডহর কলাপাড়ার কন্ঠশিল্পী রহিমা আক্তার রুহি।
শনিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার বাবা আবুল কালাম আজাদ একজন বাউল শিল্পী। আমি নিজেও। আমরা বাউল পরিবারের লোক। গান গেয়েই আমাদের সংসার চলে। বাবা সিলেট বেতারের একজন তালিকাভূক্ত বাউল শিল্পী।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জালালাবাদ থানার কান্দিগাও ৭নং ওয়ার্ডের পূর্বদশা গ্রামের মৃত সওয়াব আলীর পুত্র ইলিয়াছ মিয়াসহ তার সহযোগী আলাউদ্দিন, মানিক, সুবান মিয়া, আমাদেরকে গানের একটি অনুষ্ঠানের জন্য সিলেট থেকে কক্সবাজার নিয়ে যায়। ২ ফেব্রুয়ারি সকালে পরিবারের সকল সদস্যসহ আমরা দুটি গাড়ি নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দ্যেশে যাই। সেখানে দু’দিন গান বাজনা ও অনুষ্ঠান শেষে ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। হবিগঞ্জের মাধবপুর পুলিশ চেকপোষ্টে আসার পর, পুলিশ জিপ গাড়িটি তল্লাশি চালায়। এসময় হঠাৎ চালক আলাউদ্দিন পুলিশের চোখের সামনে পালিয়ে যায়। পুলিশ গাড়ির বনেট ও ড্রাইভিং সিটের নিচের বক্স থেকে বিশ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। ইয়াবা দেখে আমরা হতবিহব্বল পড়ি।
এরপর তিনি বলেন, পুলিশ আমাদের পরিবারের সবাইকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। মাদক ব্যবসায়ী বলে আটক করে। আমাদের সাথে হারমনি, ঢোল,তবলা, মন্দিরা ও গানের ডায়েরী ছিলো, যা এখন পুলিশী হেফাজতে রয়েছে। পরে আমার পিতা বাউল আবুল কালাম আজাদ ও ঢোল বাদক ভাই ইমনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। আমাকে ও আমার মা, ছোট বোন এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়। বর্তমানে আমার পিতা ও ভাই হবিগঞ্জ জেল হাজতে রয়েছেন।
রুহি বলেন, আমাদের ধারণা ইলিয়াছ আলী ও তার লোকজন মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকতে পারে। তারা ধোঁকা দিয়ে সুকৌশলে আমাদের জিপ গাড়িতে অবৈধ মাল পাচারের উদ্দ্যেশে রাখতে পারে। আমরা এই বিষয় সর্ম্পকে কিছু জানিনা বা জানতাম না।
তিনি বলেন, আমার সহজ সরল গায়ক পিতা এসবের কিছু অবগত নন। তাকে ফাসাঁনোর জন্য দুস্কৃতিকারীরা আমাদের বহনকৃত গাড়িতে এই ইয়াবা রেখেছে। পুলিশ আমার পিতা ও ভাইকে আটক করলেও মুলহোতা ইলিয়াছ আলী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। মাধবপুর থানার এসআই বাদী হয়ে ইয়াবা উদ্ধারের সাথে আমার বাবা ও ভাইকে জড়িয়ে যে মামলাদায়ের করেছেন, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। ইয়াবা বিষয়ে আমরা কিছুই জানতামনা।
রুহি আরও বলেন, আমাদের পরিবার বাউল পরিবার হিসেবে পরিচিত। আমরা জীবনের তাগিদে গান গেয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। বর্তমানে পিতার অনুপস্থিতে আমরা চরম দুর্ভোগ ও অসহায় অবস্থায় জীবন-যাপন করছি। থানা পুলিশ আমাদের কোনো ধরণের সহায়তা দিচ্ছেনা। আদালতে আমার পিতার জামিন করানোসহ মামলা বিষয় নিয়ে আমরা সিলেট থেকে হবিগঞ্জ যাতায়াত করাসহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমার বাবা ও ভাই অপরাধ না করেও কারাভোগ করছেন। আমরা চাই পুলিশ সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করুক।
সবশেষে অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ ও কারাগারে আটক বাবা ও ভাইয়ের মুক্তি দাবি করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তার মা ও ছোটবোনও উপস্থিত ছিলেন। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি।