• ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

জাতির গর্বের প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী : রাষ্ট্রপতি

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৮, ২০১৮
জাতির গর্বের প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী : রাষ্ট্রপতি

সিলেট সুরমা ডেস্ক : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির গর্বের প্রতীক। গত ১০ বছরে সেনাবাহিনীর অবকাঠামোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর অংশ হিসেবে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নসহ শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সমরাস্ত্র ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, অবকাঠামোগত, কৌশলগত ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে এক দশক আগেকার সেনাবাহিনীর চেয়ে আজকের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স¤পূর্ণ আলাদা এবং আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদির সমন্বয়ে অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ ও চৌকস।

আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) ৭৬তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ শেষে ক্যাডেটদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা এদেশের সন্তান, জনগণের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নায় তোমাদের সমান অংশীদার হতে হবে। যে কোনো দুর্যোগ-দুঃসময়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা সজাগ থাকতে হবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিএমএ আজ একটি অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানস¤পন্ন একাডেমি। এখানে ক্যাডেটদের ইনডোর প্রশিক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। চালু করা হয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে চার বছর মেয়াদি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি। জাতির পিতার হাতে যে সেনাবাহিনীর যাত্রা শুরু হয়েছিল, তার সুনাম আজ বহির্বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়েছে।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন, সুশৃঙ্খলভাবে ত্রাণ বিতরণ ও তাদের পরিচয়পত্র তৈরিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশ-বিদেশে দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্ব দেখিয়ে সেনাবাহিনী সব মহলের প্রশংসা অর্জন করেছে।

এবারের কুচকাওয়াজে ২৫৪ জন বাংলাদেশি, দুইজন সৌদি ও একজন শ্রীলঙ্কার ক্যাডেটসহ মোট ২৫৭ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। এরমধ্যে ২১৭ জন পুরুষ ও ৩৭ জন নারী ক্যাডেট রয়েছেন।

কুচকাওয়াজে ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার এ কে এম ইনজামামুল হক সেরা চৌকস ক্যাডেট বিবেচিত হন এবং সোর্ড অব অনার লাভ করেন। এছাড়া কো¤পানি সিনিয়র আন্ডার অফিসার ইবনে ইজাজ হাসান সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক অর্জন করেন। পরে ক্যাডেটরা আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করেন এবং মা-বাবা ও অভিভাবকরা নবীন অফিসারদের র‌্যাংক-ব্যাজ পরিয়ে দেন।
এর আগে বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানান।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের একাধিক সদস্য, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, বিএমএর কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল আনোয়ারুল মোমেন, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, ঢাকার বৈদেশিক কমিশনের কূটনীতিক, উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের অভিভাবকবৃন্দ।
তিন দিনের সফরে শুক্রবার বিকালে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে রাত্রি যাপন করেন তিনি।

আজ ভাটিয়ারির বিএমএ-তে প্রেসিডেন্ট প্যারেড ২০১৮ এ যোগ দেন। আগামীকাল রোববার বিএনএ-তে মিডশিপম্যান ২০১৬ ব্যাচ ও ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার-২০১৮/বি ব্যাচের শীতকালীন প্রেসিডেন্ট কুচকাওয়াজ ২০১৮-তেও যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। আগামীকাল বিকালে রাষ্ট্রপতির ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন।