• ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

স্থানীয় নির্বাচনে নিজের অবস্থান ধরে রাখার লোভেই দলবদল : ফারুক মাহমুদ চৌধুরী

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ২২, ২০১৯
স্থানীয় নির্বাচনে নিজের অবস্থান ধরে রাখার লোভেই দলবদল : ফারুক মাহমুদ চৌধুরী

স্থানীয় নির্বাচনে নিজের অবস্থান ধরে রাখার লোভেই দলবদল : ফারুক মাহমুদ চৌধুরী

সিলেট সুরমা ডেস্ক : সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়ন পরিষদের টানা চারবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবুল কালাম। বিএনপি সমর্থিত সমর্থিত প্রার্থী হিসেবেই চারবার নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবার হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত এই উপদেষ্টা।

দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক গত ১৯ জানুয়ারিতে যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেবল এই দু’জন নয়, সিলেটে বিএনপি দলীয় আরও বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এরমধ্যে কয়েকজন উপজেলা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রয়েছেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যেই তারা দলবদল করছেন বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভূমিধ্বস বিজয়ের পর আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও বিএনপির প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হওয়া নিয়ে সন্দিহান তারা। এবারও উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে দলীয় প্রতীকে। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়েও সন্দিহান বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা। বরং আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিতে বিজয় অনেকটা নিশ্চিত বলে ধারণা তাদের। ফলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হতেই সরকার দলে ভেড়া শুরু করেছেন বিএনপি দলীয় জনপ্রতিনিধিরা।

কেবল হাবিব হোসেন আর আবুল কালামই নয়, বিএনপির আরও একাধিক জনপ্রতিনিধি আওয়ামী লীগে যোগ দিতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

গুঞ্জন রয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীকে নিয়েও।

তবে আরিফুল হক চৌধুরী সম্প্রতি বিএনপির একটি অনুষ্ঠানে দলবদলের গুঞ্জনকে অপপ্রচার বলে এতে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলবদলকারীদের স্বাগত জানালেও সিলেট বিএনপি নেতারা তাদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। আর বিশিষ্টজনরা মনে করেন, ‘হালুয়া-রুটির ভাগ’ পেতেই সরকার দলে ভিড়ছেন জনপ্রতিনিধিরা।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ  বলেন, যারা দল বদল করে তারা বিশ্বাসঘাতক। তারা জনগণের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করেছ।

বিএনপি অনেক বড় দল, এখানে অনেকেই আসবে আবার যাবে উল্লেখ করে জেলা বিএনপির এ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, হাবিব হোসেন দীর্ঘদিন আগে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর পর থেকে অনেক দিন উনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। বলতে গেলে তিনি বর্তমানে বিএনপির কেউ নয়।

আলী আহমদ বলেন, বিভিন্ন ভাবে নেতাকর্মীদের মামলাসহ নানা ভাবে হয়রানি করে তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে, ফলে অনেকে দলবদল করতে পারে।

আলী আহমদ আরও বলেন, আবুল কালাম সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্ঠামণ্ডলির সদস্য ছিলেন। সোমবার দলীয় বিভিন্ন কারণে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তবে উনার আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার ঘোষণার কথা তিনি জানেন না বলে জানান।

তবে দলবদলের প্রসঙ্গে কুচাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, আমার ইউনিয়নের জনগণের কথা চিন্তা করেই আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছি। সরকার ও স্থানীয় সাংসদ অন্য দলের হলের এলাকার উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত বরাদ্দ পাওয়া যায় না। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থেই আমি দলবদল করছি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী স্থানীয় এসব জনপ্রতিনিধিদের দলবদল ‘হালুয়া রুটির আশায়’ বলে মন্তব্য করছেন। তিনি বলেন, ৭৫ সালের পর থেকেই দলবদলের একটা প্রথা চলে আসছে। দলবদল বিষয়টা বিশ্বাসঘাতকতার মতো একটি কাজ।  কিন্তু গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যে ভাবে দলবদল করছেন তা আগামী স্থানীয় নির্বাচনে নিজের অবস্থান ধরে রাখার লোভেই করছেন বলে মনে করছেন সুজন সিলেটের এ সভাপতি।

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাস করে যে কেউ আসতেই পারে। এ বিষয়কে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু কোনো সন্ত্রাসী বা অবৈধ কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ যদি আওয়ামী লীগে আসতে চায় তাহলে তাকে আওয়ামী লীগে নেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

তথ্য সূত্র, সিলেট টুডে ২৪ ডটকম লিংক সংযুক্ত