• ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

শায়খে কাতিয়ার নামে রাণীগঞ্জ সেতুর নামকরনের দাবি

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মার্চ ৪, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীর উপর সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় রাণীগঞ্জ সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। এ সেতুটি নির্মিত হলে ঢাকার সাথে সুনামগঞ্জ বাসীর ৩ থেকে ৪ ঘন্টা দুরত্ব কমে যাবে।এদিকে সুনামগঞ্জ বাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের রাণীগঞ্জ সেতু নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। সেতুর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সকল নি¤œমাণের নির্মাণ সামগ্রী। এভাবে সেতুটি নির্মিত হলে নির্মাণের পর পরই হয়তো সেতুটি ভেঙে যাবার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, বিগত ২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় এবং অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের প্রচেষ্টায় ১২৬ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৭০২ মিটার দৈর্ঘ্যরে রাণীগঞ্জ সেতুর কাজ শুরু হয়। আগামি ৩ বছরের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সেতুর নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স লিমিটেড। উন্নত প্রযুক্তির প্ল্যান মেশিন দিয়ে দ্রুত এগিয়ে চলছে নির্মাণ কাজ। প্রতিদিন ৩০০ জন শ্রমিক বিভিন্ন দায়িত্বে কাজ করছেন। তবে সেতুর নির্দিষ্ট স্থান কুশিয়ারা নদীর মধ্যস্থান যেখানে সেতুর ফাইলিং কাজ চলছে, সে স্থানের পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী খননের মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে সেতুর পিলারের নিচের মাটি খননকৃত গভীর স্থানে সরে গিয়ে সেতুর পিলার হুমকির মুখে পড়তে পারে। যে কারণে মাটির অভাবে ভবিস্যতে সেতুটি দেবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে সরজমিনে সেতুর পশ্চিমপাড়ে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর নিচের পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। এখানে চালু রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির মসলা মিশ্রনের প্ল্যান মেশিন। শ্রমিকরা ট্রাক থেকে নামিয়ে নি¤œমাণের মাটিযুক্ত পাথর না ধুয়ে টুকরিতে ভরে নিয়ে মেশিনে ফেলছেন। ঠিক এভাবে মেশিনে ফেলা হচ্ছে বালু, সিমেন্টসহ ইত্যাদি মসলা তৈরির সামগ্রী। এরপর মেশিনে সকল সামগ্রীকে মসলা বানিয়ে ফেলা হচ্ছে পিলার তৈরির কাজে। এ সময় দেখা যায়, এক টুকরি পাথরের সাথে প্রায় আধা টুকরি মাটি রয়েছে। মাটি মিশ্রন পাথর দিয়ে এগিয়ে চলছে সুনামগঞ্জ বাসীর স্বপ্নের রাণীগঞ্জ সেতুর কাজ। নিজ চোখে না দেখলে হয়তোবা অনেকে বিশ্বাস করতে পারবেন না। ঠিক এভাবেই ইতোমধ্যে রাণীগঞ্জ সেতুর বেশ কয়েকটি পিলার নির্মাণ হয়েছে। এসব পিলারের উপর নির্মিত হবে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রাণীগঞ্জ সেতু। এসব নি¤œমাণের সামগ্রী দিয়ে ও অপরিছন্নভাবে তৈরি করা সেতুর ভবিস্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় জনতা। সেতুটি নির্মাণের পর ভেঙে অথবা দেবে যাওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে। তাই মানসম্মত সামগ্রী দিয়ে সঠিকভাবে সেতুর নির্মাণ কাজ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় জনতা।
এ ব্যাপারে রাণীগঞ্জ সেতুর কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার জিয়াদুল ইসলাম জামাল বলেন, দ্রুত এগিয়ে চলছে রাণীগঞ্জ সেতুর নির্মাণ কাজ। ইতোমধ্যে প্রায় ১৫ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আশা করছি আগামি আড়াই বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, পাথর ধুয়ে কাজ করার কথা রয়েছে। তিনি স্বীকার করে বলেন, আমি সাইট থেকে চলে আসার পর শ্রমিকরা না ধুয়ে কাজ করেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানান, উন্নতমাণের মালামাল দিয়ে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য আমি রাণীগঞ্জ সেতু নির্মাণের সাথে জড়িত সকলকে অনুরোধ করেছি। এরপরও যদি কেউ মাটিযুক্ত নি¤œমাণের মালামাল দিয়ে কাজ করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে-রাণীগঞ্জ সেতুর নাম জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের কাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত আলেমে দ্বীন হযরত মাওলানা আমিন উদ্দিন শায়খে কাতিয়া’র নামে নাম করণের দাবি জানিয়েছেন শায়খে কাতিয়ার অনুসারী আলেমা-উলামাগণসহ স্থানীয় জনতা। এর আগে রাণীগঞ্জ সেতুর নাম জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ভূরাখালি গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদের নামে নাম করণের দাবি জানিয়ে ছিলেন সামাদ অনুসারীরা। তবে এখন পর্যন্ত কোন নামই বাস্তবায়ন হয়নি।