• ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ সংশোধন ও বিআরটিএ’র হয়রানি বন্ধ করুন

sylhetsurma.com
প্রকাশিত নভেম্বর ১৬, ২০১৯
সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ সংশোধন ও বিআরটিএ’র হয়রানি বন্ধ করুন

সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ সংশোধন ও বিআরটিএ’র হয়রানি বন্ধের দাবি করেছে সিলেট জেলা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন। দাবি দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে সাধারণ শ্রমিকদের নিয়ে আগামী ১৮ নভেম্বর সোমবার কোর্টপয়েন্টে বেলা ১১টায় থেকে ১ ঘন্টার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত কর্মসূচীতে সংশ্লিষ্ট সকলকে যথা সময়ে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন ছিলেন সিলেট জেলা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নংচট্ট-৭০৭ এর জেলা কার্যকরি কমিটির সভাপতি জাকারিয়া আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. আজাদ মিয়া।
সিলেট জেলা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্ট-৭০৭ এর জেলা কার্যকরি কমিটির উদ্যোগে সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ আইনে বৈষম্য ও বিআরটিএ হয়রানির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ প্রণীত হয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হলেও বিধি, প্রবিধান প্রণয়ন না হওয়ায় সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কার্যকরের তারিখ ১ সপ্তাহ করে ২ বার তা পিছিয়েছেন। ৬৬ ধারায় চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে ২৫ হাজার টাকা ও ৬ মাসের কারাদন্ড দেওয়া হবে। চালকরা কি এই জরিমানা দিতে সক্ষম? ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ৮ম শ্রেণি পাশ হতে হবে, অথচ জাতীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, সিটি বা পৌরসভার মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা মেম্বার কারো বেলায়ই শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন নাই বললেই চলে। ধারা-৭২ উল্লেখ্য করা হয়েছে রেজিস্ট্রেশন ব্যতিত মটরযান চালনা সংক্রান্ত, যদি কোন ব্যক্তি ধারা-১৬ এর বিধান লঙ্ঘন করলে এ অপরাধের জন্য অনধিক ৬ মাসের কারাদন্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। অথচ ৫ বৎসরের বেশী সময় নিয়েও সিলেটে সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সার রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হচ্ছে না। রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্দিষ্ট ফি জমার পরও চালক বা মালিকরা রেজিস্ট্রেশন পাচ্ছেন না।
একটি অটোরিক্সা দেশে প্রবেশ করা মাত্র সরকারকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার বেশি টেক্স দিতে হয়, রেজিস্ট্রেশন ফি আরোও ২০ হাজার টাকা। এরপরও অবৈধ গাড়ির কালিমা থেকে মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে না। অবৈধ বলে পুলিশ যেনতেনভাবে গাড়িগুলো আটক করছেন। আটককৃত গাড়িগুলো আবার ৫/১০ হাজার টাকা কোন জরিমানা দিয়ে ফেরৎ আনতে হয়। আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। ধারা-৭৫ এ উল্লেখ্য রয়েছে ফিটনেস সনদ ছাড়া মেয়াদত্তেীর্ণ ফিটনেস সনদ ব্যবহার করে মটরযান চালনা সংক্রান্ত ধারা-২৫ এর লঙ্ঘন দন্ড হিসাবে ৬ মাসের কারাদন্ড ও নগদ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা। আমাদের প্রশ্ন ৩ কোটি টাকা মূল্যের একটি বাসের জরিমানা যদি ২৫ হাজার ও ৩ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি অটোরিক্সার জন্য একই জরিমানার বিধান কতটুকু যুক্তিসংগত? ধারা-৭৬ এ উল্লেখ্য রয়েছে টেক্স টোকেনের মেয়াদত্তেীর্ণ হলেও ১০ হাজার টাকা জরিমানা। সেখানেও বড় গাড়ি-ছোট গাড়ি একই মাপকাঠিতে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। যার কারণে উক্ত আইন দ্বারা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সা চালকরা যাত্রি সেবার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করার একমাত্র পথ সেটা বন্ধ হওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। যদি সরকারের নীতি নির্ধারণের পর্যায়ে এ বাহনটিকে উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, তাহলে অন্য ভাবে এটাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারতেন। উক্ত আইন দিয়ে দিন মজুর শ্রমিকদেরকে হয়রানি করার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। আর যদি সরকার এই বাহনটিকে উচ্ছেদ করতে না চান বা এরকম কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে থাকেন, তাহলে অনতিবিলম্বে এই বৈষম্যমূলক জায়গাগুলিকে (ধারাগুলি)কে সংশোধন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
গত ১১ নভেম্বর সিলেটের স্থানীয় একটি পত্রিকায় সিলেট বিআরটিএ’র দুর্নীতি সম্পর্কে বর্তমান বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে চালকরা কিভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করবে এবং এটি পেতে ২ বৎসর অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয় তাদের। লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহযতর ও দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য দাবি ও আন্দোলন সংগ্রাম করেও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। পুলিশ প্রশাসন এ আইন বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন প্রকারের লিফলেট, মাইক এলাউন্স সহ বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেট শহরে কোথাও স্থায়ী পার্কিং এর ব্যবস্থা নেই। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে পার্কিং সমস্যা সমাধাণের দাবি জানালেও কোন সূরাহা হয়নি। অনতিবিলম্বে বিষয়টির সমাধান দেওয়ার জন্য সিলেটের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি আমারা দাবি জানাচ্ছি। ধারা-৯০ তে উল্লেখ্য আছে নো পার্কিং মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এটাও একটি বৈষম্য মূলক আইন হিসাবে আমাদের কাছে বিবেচিত। ধারা-১১০ এ উল্লেখ্য রয়েছে ওয়ারেন্ট ব্যতিত গ্রেফতারের ক্ষমতা। ধারাগুলো যেমন- (৭২) (৭৩) (৭৫) (৭৭) (৭৯) (৮৪) (৮৬) (৮৯) (৯২) (৯৮) বা (১০৫) এর অধিন যে কোন ধারা লঙ্ঘনের অপরাধে পুলিশ কর্মকর্তা চালককে যে কোন সময় গ্রেফতার করতে পারেন। এই সমস্ত আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সাধারণ চালকরা পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার আশংকা আরো বেড়ে গিয়েছে। ধারাগুলি সংশোধনকল্পে যুগপোযোগি ও বাস্তব সম্মত সংশোধনের প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি সিলেট জেলা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সার ৪০ হাজার শ্রমিকের পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি। আইন সংশোধনের পূর্বপর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন কতৃক সাধারণ শ্রমিকগণকে সড়ক পরিবহণ আইনের নামে হয়রানি না করার জন্য এবং আইনের অপপ্রয়োগ না করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা সি.এন.জি চালিত অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নংচট্ট-৭০৭ এর জেলা কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আজাদ মিয়া, সহ-সভাপতি আবুল হোসেন খাঁন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল আহমদ, কল্যাণ সম্পাদক আব্দুল মন্নান, অর্থ সম্পাদক মামুুনুর রশিদ মামুন, সদস্য রফিকুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এম. বরকত আলী, রাজা আহমদ রাজা, নুরুল হক, লিটন আহমদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সুজন মিয়া, এপল আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা উপ-পরিষদের সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ, সম্পাদক শিবলী আহমদ, হুমায়ূন রশিদ চত্ত্বর উপ-পরিষদের সম্পাদক মিলন আহমদ, টিলাগড় উপ পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলেক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ঝাড়– মিয়া প্রমুখ। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি।