• ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলন : সিলেট বিভাগে এশিয়ার সবচেয়ে বড় মেডিকেল ক্যাম্প সম্পন্ন

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মার্চ ৫, ২০২৪
তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলন : সিলেট বিভাগে এশিয়ার সবচেয়ে বড় মেডিকেল ক্যাম্প সম্পন্ন

তাফিদা যেনো আলো হয়ে জ্বললো অসহায় চিকিৎসাপ্রত্যাশীদের সামনে। অথচ তাফিদারই জীবনের আলো একসময় নিভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো চিকিৎসাসংকটের কারণে। সারা বিশ্বের অগণিত মানুষের ভালোবাসায় সে সংকট কাটিয়ে ৯ বছর বয়সী ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শিশু তাফিদা রাকিব এখন সুস্থ হওয়ার পথে। পৃথিবীর সহৃদয় মানুষরা তাফিদাকে যে ভালোবাসার সহায়তা উপহার দিয়েছিলেন তার অংশ থেকেই তার বাবা-মা তাফিদার নামে চ্যারিটি ফাউন্ডেশন গড়ে তোলেন।
‘তাফিদা-রাকিব ফাউন্ডেশন’ নামের সে দাতব্য সংগঠনের উদ্যোগে সিলেট বিভাগে এক সপ্তাহব্যাপী চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্ধ শতাধিক চিকিৎসক। বাংলাদেশের ইতিহাসে দেশের বাইরে থেকে এত বড় চিকিৎসক প্রতিনিধি দল এর আগে আর কখনও সেবা দিতে আসেনি।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে সিলেট নগরীর বন্দরবাজারে একটি অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের সভাপতি সেলিনা বেগম। তার ছোট মেয়ে তাফিদা যখন মাত্র চার বছরের তখন মস্তিষ্কে অজানা অসুখের কারণে বহু মাস অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিল। মা-বাবার পক্ষে হাসপাতালের ব্যয়বহুল খরচ বহন করা অসাধ্য হয়ে পড়ে এক পর্যায়ে। ব্রিটিশ সরকার মেশিন ও ভেন্টিলেটর ডিসকানেন্ট করবে বলে ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে সারা ইউরোপে তোলপাড় হয়ে যায়। তখন ইতালি সরকার শিশুটির দায়িত্ব নেয়। এগিয়ে আসেন সারা বিশ্বের মানবিক হৃদয়ের মানুষরাও। সে ভালোবাসার তহবিল থেকেই গড়ে উঠেছে তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশন। তারা মনে করেন মানুষের ভালোবাসায় যে ফাউন্ডেশন গড়ে উঠেছে তার ভিত কখনওই নড়বড়ে হবে না।
সিলেট বিভাগে পরিচালিত সপ্তাহব্যাপী তাফিদা রাকিব মেগা মেডিকেল ক্যাম্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন ফাউন্ডেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এটিই এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় মেডিকেল ক্যাম্প। ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত চলা ক্যাম্পে সিলেট ও মৌলভীবাজারে মেডিসিন, ইমার্জেন্সি মেডিসিন, নাক-কান-গলা, কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিন, নিউরোলজি, গাইনোকোলজি, ইউরোলজি, শিশুচিকিৎসা, চক্ষুসেবাসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। মেডিকেল ক্যাম্প চলাকালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা বিষয়ক সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ও বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের সহ সভাপতি ড. আহমদ আল কবির, ডা. জিয়াউদ্দিন, ডা. ক্যারেন আবিদ, ডা. আবিদ মাহমুদ, নাহিদ, মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ মুনিম প্রমুখ
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে তাফিদা-রাকিব ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে চিকিৎসা সহায়তায় যাত্রা শুরু করলো। ভবিষ্যতে এর পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে। সপ্তাহব্যাপী মেডিকেল ক্যাম্পে মানুষের যে সাড়া পেয়েছেন তাতে তারা অভিভূত। বাংলাদেশে তাদের এ যাত্রা আরও সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বছরে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় বছরে অন্তত ২/৩ বার বাংলাদেশে এ ধরনের মেডিকেল ক্যাম্প তারা পরিচালনা করবেন।
ক্যাম্প চলাকালীন বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তাফিদা রাকিব ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে সরকারের কাজে আবেদন জানানো হয়েছে ভবিষ্যতে যারা বাংলাদেশে দাতব্য সেবা দিতে আসবে তাদেরকে যেনো ফি দিতে না হয়।
ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা তুলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদেশের চিকিৎসকরা যাতে অনলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন সে ব্যাপারে তারা একটি উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যে একটি উন্নতমানের দাতব্য হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি