• ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সুনামগঞ্জের তিন বন্দর দিয়ে কয়লা আমদানী

sylhetsurma.com
প্রকাশিত নভেম্বর ২৩, ২০১৬

নিজস্ব সংবাদদাতা
নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম ভান্ডার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তিন শুল্কবন্দর (বড়ছড়া, চারাগাঁও-বাগলী) দিয়ে কয়লা আমদানী শুরু হয়েছে। জানা গেছে, আজ বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর একটার দিকে ওপার থেকে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ডিপোতে কয়লা বুঝাই ট্রাক প্রবেশ করা শুরু করেছে। তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি আলহাজ্ব আলকাছ উদ্দিন খন্দকার ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ১লা নভেম্বর থেকে আমদানী কার্যক্রম চালুর কথা থাকলেও নানা নাটকীয়তায় তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে কয়লা আমদানীর খবরে বন্দর সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উৎফুল্ল দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) এর রায়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় রপ্তানীকারকরা সে দেশের উচ্চ আদালতে আপিল করলে উত্তোলিত কয়লা রপ্তানীর জন্য ৮ মাস সময় বাড়িয়েছেন আদালত। যা ১লা নভেম্বর থেকে বলবৎ থাকবে।
অন্যদিকে বছরের পর বছর এই তিন শুল্কবন্দর বন্ধ থাকায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিনযাপন করে অবশেষে কাজের সন্ধানে শহরপানে ছুটে যাওয়া অধিকাংশ শ্রমিক পরিবার। বিপাকে পড়েন বন্দরের ৮ শতাধিক আমদানীকারক ও সংশ্লিষ্ট অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক পরিবার। সূত্র জানায়, দেশের অন্যতম এই তিন বন্দরে গত দুই অর্থবছর ধরে আমদানী কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রাজস্ব আদায়ে ভাটা পড়ে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকার লক্ষ্যমাত্রার অধিক মুনাফা আদায় করলেও দুই অর্থবছর ধরে রাজস্ব আদায় রয়েছে শুন্যের কোটায়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য নজির হোসেনের প্রাণান্ত চেষ্ঠায় ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বড়ছড়া শুল্কবন্দর দিয়ে প্রথমে কয়লা আমদানি শুরু হয়। প্রতিবছর সরকারি কোষাগারে লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণের দ্বিগুণ রাজস্ব জমা পড়তে থাকলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে চারাগাঁও এবং বাগলী (বিরেন্দ্রনগর) এলাকা দিয়ে কয়লা-চুনাপাথর আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। এই তিন শুল্ক বন্দর দিয়ে বর্তমানে ৮ শতাধিক আমদানিকারক রয়েছেন। আর পরিবহন কাজে জড়িত রয়েছেন অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিক।
প্রসঙ্গত, ভারতের মেঘালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ডিমাহাসাও’ জেলা ছাত্র ইউনিয়নের আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল ন্যাশনাল গ্রীণ ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) মেঘালয়ে কয়লা খনন ও পরিবহন বন্ধের নির্দেশ দেন। একই বছরের ৬ মে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভাগীয় মুখ্যসচিব এ ব্যাপারে প্রতিটি জেলায় নির্দেশ জারি করেন। ফলে ১৩ মে থেকে মেঘালয় সীমান্ত জেলাগুলোতে ১৪৪ ধারা জারি করে কয়লা পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় সুনামগঞ্জের তিনটি শুল্কবন্দরসহ সিলেট ও ময়মনসিংহ জেলার সকল শুল্কবন্দরের আমদানী কার্যক্রম। পরবর্তীতে রপ্তানীকারকরা আইনী লড়াই করে প্রথমে উত্তোলিত কয়লার রাজস্ব জমা দিয়ে তিন মাস (এপ্রিল, মে ও জুন) রপ্তানীর সুযোগ পায়।
সর্বশেষ গত বছরের ১৬ মে থেকে কয়লা রপ্তানী বন্ধ হয়ে যায়। এ ফাঁকে অপেক্ষাকৃত উন্নতমানের মেঘালয়ের কয়লা আমদানী বন্ধ থাকায় দেশের বাজার দখল করে নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া, চীন ও আফ্রিকার কয়লা।