• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

দক্ষিণ সুরমা পুলিশ ফাঁড়ির নাকের ডগায় কদমতলী পয়েন্টে দিন দুপুরে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা চুরি : বেড়েছে অপরাধ

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মে ১৮, ২০১৯
দক্ষিণ সুরমা পুলিশ ফাঁড়ির নাকের ডগায় কদমতলী পয়েন্টে দিন দুপুরে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা চুরি : বেড়েছে অপরাধ

Manual5 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি : দক্ষিণ সুরমা পুলিশ ফাঁড়ির পাশেই কদমতলী পয়েন্টে অবস্থিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্টানে দিন দুপুরে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা চুরি করেছে একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্র।

কদমতলী পয়েন্টের আল বারাকাত ম্যানশনের সানাই টেলিমিডিয়া এন্ড বাঁধন স্টোরে শুক্রবার দুপুর ১ টা ২০ মিনিটের সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাটারের নিচ দিয়ে চুর ঢুকে দোকানের ভেতর থেকে টাকাগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে থাকা সিসি ক্যামেরায় চুরের চুরির দৃশ্য রেকর্ড হয়।

ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, লুঙ্গি ও ফুল হাতা শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তি সাটারের নিচ দিয়ে ঢুকে ভেতরে প্রবেশের পর ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলে পূনরায় সাটারের নিচ দিয়ে বেরিয়ে যায়।

Manual1 Ad Code

প্রতিষ্ঠানের মালিক দক্ষিণ খোজারখলা এলাকার মৃত আব্দুর রউফের ছেলে হেলাল আহমদ ঘটনার সময় জুমআর নামাজের জন্য তিনি মসজিদে অবস্থান করছিলেন। চুরির ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দিনের আলোয় চুরি হওয়ায় অনেকেই পাশ^বর্তী দোকানদারদের সন্দেহের চোখে দেখছেন।

সানাই টেলিমিডিয়া এন্ড বাঁধন স্টোরের পাশেই থাকা মাংসের দোকান আল আমিনের একজন কর্মচারী বলেন, চুরির সময় তিনি দুজন লোককে দোকানের সাটারের দুদিকে দাড়িয়ে ফর্দা টাঙ্গাতে দেখেছেন।

Manual1 Ad Code

অপরদিকে সানাই টেলিমিডিয়া এন্ড বাঁধন স্টোরের মালিক হেলাল আহমদ জানান, তিনি ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের ব্যাংকিং এজেন্ট। এ ছাড়া তার দোকানে বিকাশসহ অন্যান্য সকল মোবাইল ব্যাংকিং এর টাকা লোকজন লেনদেন করে থাকেন। চোরেরা পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি।

দক্ষিণ সুরমা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই শাহিন মিয়া বলেন, ঘটনার পরপরই তিনি ও তার পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। অপরাধীদের গ্রেফতারে তিনি সর্বাক্তক চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান।

অপরদিকে রমজান মাসেও জমজমাট সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন বালুর মাঠ, চাঁদনীঘাট মাছ বাজারসহ কয়েকটি স্পটের জুয়ার আসর। দক্ষিণ সুরমা পুলিশ ফাঁড়ির সামনেই বালুর মাঠ নামক অপরাধের এ স্বর্গরাজ্যে দিনেরাতে প্রকাশ্য চলছে জুয়া, মাদক ও অসামাজিক কর্মকা-।

আর সে কারণে সড়কে ছিনতাই ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িতে বেড়েছে চুরি। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কদমতলী বালুর মাঠ, ফল মার্কেটের সামন, যমুনা মার্কেট, চাঁদনীঘাট মাছ বাজার, ক্বিন ব্রীজের নিচে, দরিয়াশাহ-এর মাজার সংলগ্ন এলাকা, নতুন রেলওয়ে স্টেশন, ভার্থখলা নছিবা খাতুন স্কুলের গলিসহ একাদিক কলোনিতে চলছে ভারতীয় তীর জুয়া, আইপিএল জুয়া, টিকটিকি ও চরকির মতো জুয়া। বালুর মাঠে জুয়ার সাথে মাদক ও অসামাজিক কর্মকা- বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে একটি সিন্ডিকেট এসব অনৈতিক ব্যবসা অনেকটা গোপনে পরিচালনা করলেও তারা রমজানে প্রকাশ্যে এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভার্থখলা এলাকার কুমিল্লাপট্টির মানিক তার ভাই আইয়ুব, ফরিদ, চাঁদনীঘাটে নজরুল, সুবেল, বালুর মাঠে আল-আমিন, বাবুল ও ক্বিন ব্রীজের নিচে তাহের। জনশ্রুতি রয়েছে, মূল হুতারা ফাঁড়ি পুলিশকে ম্যানেজ করে বীর দর্পণে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর, মাদক ও অসামাজিক কর্মকা- পরিচালনা করছে। প্রথম রমজান থেকে সারারাত প্রকাশ্যে চলে একাদিক জুয়ার আসর। আর জুয়ায় বড় অংক ব্যতীত সব টাকা লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং এ। পূর্বে বালুর মাঠে কদমতলী এলাকাবাসী জুয়াড়িদের আস্তানা গুড়িয়ে দিয়ে চেয়ার টেলিব ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় কাউন্সিলর অসামাজিক কর্মকা-ের স্থান ভেঙে দেন।

Manual1 Ad Code

অনেকবার এই বালুর মাঠসহ দক্ষিণ সুরমায় অভিযান পরিচালনা করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। আবার ভ্রাম্যমাণ আদালত জুয়াড়িদের আটক করে কারাদন্ড প্রদান করে। জামিনে বের হয়ে জুয়াড়িরা পুনরায় জড়িয়ে পরে অপরাধে। সিলেট র‌্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে র‌্যাব প্রায় সময় দক্ষিণ সুরমা থেকে মাদকসহ অপরাধীদের আটক করে আসলেও পুলিশের অতি অর্থলোভী কিছু সদস্যের কারনে নির্মূলন হচ্ছেনা অপরাধ।

অপরাধের আস্তানায় অভিযানের পূর্বে তারাই আগাম অভিযানের বার্তা পৌছে দেয়ায় কোনো কোনো স্পটে দু’একজন জুয়াড়ি ছাড়া মূল হোতাদের খোঁজে পাওয়া যায় না আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। আর সে কারণে দিনদিন বিস্তৃত হচ্ছে অপরাধের ডালপালা। ফলে পকেট ভারি হচ্ছে অসাধু পুলিশের। ধ্বংস হচ্ছে যুব সমাজ। এ বিষয়ে কথা হয় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোহেল রেজা পিপিএম এর সাথে।

পূর্বে কেউ আমাকে এসব আস্তানা ও আপরাধের বিষয়ে অবগত করে নি, আজ আপনার মাধ্যমে জানলাম, দ্রুত ব্যবস্থা নিবো, বলেন সোহেল রেজা। পবিত্র রমজানে এসব স্থানে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে সিলেট র‌্যাব-৯ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান বলেন, কিছুদিন আগে বালুর মাঠ থেকে ঝাড়ু নামের একজনকে আটক করা হয়। শীঘ্রই আবারো দক্ষিণ সুরমায় অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Manual1 Ad Code