• ৭ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৩রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে রক্ষক যখন ভক্ষক ! (ভিডিও সহ)

sylhetsurma.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৬

এমপি এহিয়ার  সাহসিকতায় হাতেনাতে ছিনতাইর অভিযোগে এএসআইসহ তিন পুলিশ আটক

এম এ মালেক
সিলেটে রাতের আধাঁরে তিন যুবককে জঙ্গি বানানোর ভয় দেখিয়ে ১৫ হাজার টাকা ছিনতাই করলো পুলিশের এক এএসআইসহ অপর দুই পুলিশ কনস্টেবল। পরে সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির যুগ্ন মহাসচিব ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়ার  হাতে ঐ ছিনতাইর অভিযোগে  তিন পুলিশ আটক হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্ঠি হয়। এমপির পায়ে ধরে ও ছাড় পায়নি আইনের পোশাক পরিহিত ঐ তিন পুলিশ সদস্য।

 


গত রাত ২ টায় সিলেট নগরীর ঝেরঝেরি পাড়ার এভারগ্রীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এমপি এহিয়া চৌধুরী জানান,তার নিজস্ব বাসভবন এভারগ্রীন ২০ নং বাসায় বিশ্বনাথ এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে তার সাথে দেখা করতে আসেন। এদের মধ্যে থেকে বিশ্বনাথ উপজেলার  দেওকলস ইউনিয়নের মজনপুরপুর গ্রামের মৃত হারিছ আলীর ছেলে দেওকলস ইউনিয়ন ছাত্র সমাজের সভাপতি আফরোজ আলী,একই উপজেলার বাগিছাবাজার উত্তর কালীজুড়ি গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে উপজেলা ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মুস্তাকিম আলী ও জানাইয়া গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ছেলে উপজেলা ছাত্র সমাজের সিনিয়র আহবায়ক দিলওয়ার আহমেদ মোটর সাইকেল যোগে এমপি এহিয়ার বাসা থেকে বের হয়ে রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বের হন।

পথিমধ্যে এমপির বাসা থেকে কিছু দুরে সোবহানীঘাট পুলিশ ফাড়ির টহলরত এএসআই মোস্তাফিজ,কনস্টেবল রাজন ও কনস্টেবল পাভেল তাদের মোটর সাইকেলের গতিরোধ করেন। পরক্ষণেই কাগজ পত্র দেখার নাম করে তিনজনকে রাস্তার পাশে দাড় করিয়ে জেরা করতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা। জেরার এক পর্যায়ে কনস্টেবল রাজন ও তার সাথে থাকা সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশের পরিচয়দানকারী শাহী ঈদগাহ এলাকার ছিনতাইকারী শামীম তিনজনকে জঙ্গি বানিয়ে আদালতে চালানের ভয় দেখান,তখন ভুক্তভোগি আফরোজ,মুস্তাকিম ও দিলওয়ার এএসআই মোস্তাফিজের পায়ে ধরে বলেন, ভাই আমরা জঙ্গি নই, আমরা এমপি এহিয়ার কর্মী, আপনারা এহিয়ার সাহেবের ভিজিটিং কার্ড দেখেন বলে কার্ড কনস্টেবল রাজনের হাতে দিলে কনস্টেবল রাজন তা ছিড়ে ফেলে অশ্লিল ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। এ সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়দানকারী শামীম ও রাজন তিনজনের দেহ তাল্লাশী করে ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাদের ছবি মোবাইলে ধারণ করে পত্রিকায় জঙ্গি বানানোর ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে ঐ তিন ভূক্তভোগি পূনরায় এমপি এহিয়ার বাসায় গিয়ে এমপিকে বিস্তারিত অবগত করলে এমপি তাৎক্ষনিক ঐ তিন পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ফোনে তাঁর বাসায় আসতে বলেন। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বেষ্ঠিত এমপির বাসায় এএসআই মোস্তাফিজ,কনস্টেবল রাজন ও পাবেল উপস্থিত হলে তিনি তাদের প্রশ্ন করলে তারা সদুত্তর দিতে পারেনি। এমপি এহিয়া কনস্টেবল রাজনের মোবাইল হাতে নিয়ে দেখেন তার তিন কর্মীর ছবি,সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি পুলিশের  ডিসি উত্তর ফয়ছল মাহমুদকে অবগত করেন। এ সময় কনস্টেবল রাজন তার বন্ধু ছিনতাইকারী শামীমকে মোবাইল ফোনে টাকা ফেরত দিতে বললে সে একটি সিএনজি যোগে লুন্ঠিত ১৫ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা নিয়ে এসে এমপির বাসার বাইরে রাজনকে ডেকে তার হাতে ৫ হাজার টাকা দিয়ে দ্রুত চলে যায়।  পরক্ষণেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সিলেট কতোয়ালী থানার ওসি সোহেল ও ফাড়ির ইনচার্জ। এর পর পুলিশের  ডিসি উত্তর ফয়ছল মাহমুদ এমপির বাসায় এসে বিস্তারিত অবগত হয়ে তিনজনের গায়ে থেকে পুলিশের পবিত্র পোশাক খুলার নির্দেশ দিলে তারা পোশাক খুলতে বাধ্য হয়। তিন পুলিশই ছিনতাইর কথা স্বীকারের পাশাপাশি তাদের সাথে শাহী ঈদগাহের ছিনতাইকারী শামীম ছিলো বলে জানায়। এ ঘটনায় পুলিশের  ডিসি উত্তর ফয়ছল মাহমুদ জানান, তিন পুলিশকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করা হবে,আর যেহেতু তিনজনই ছিনতাইর সাথে জড়িত,তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা দায়েরের জন্য ভূক্তভোগি ঐ তিন ছাত্র সমাজ নেতাদের প্রতি আহবান জানান।