• ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পরিবহন ধর্মঘটে অচল জকিগঞ্জ

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মার্চ ১৬, ২০১৭

জকিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
জকিগঞ্জ-সিলেট সড়ক সংস্কারের দাবিতে মালিক-শ্রমিক সমিতির ডাকা পরিবহন ধর্মঘট চারদিন থেকে অব্যাহত রয়েছে।  বুধবার ছিলো ধর্মঘটের চতুর্থ দিন। টানা চার দিনের পরিবহন ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে জকিগঞ্জ উপজেলা। ব্যবসা বাণিজ্যে লোকসান দেখা দিয়েছে। জেলা শহর সিলেটের সাথে জকিগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় জেলা শহর থেকে আমদানী হওয়া মালামালের দাম বেড়েছে। যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। গত চারদিন থেকে দূরপাল্লার কোন যানবাহন জকিগঞ্জ থেকে ছেড়ে যায়নি। ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ীসহ সকল মানুষই সময় মত তার গন্তব্যে যেতে পারছেনা। ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কে দাঁড়িয়ে পরিবহন না পেয়ে পায়ে হেটে লোকজন গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। জকিগঞ্জ শুল্ক ষ্টেশনের মালবোঝাই ট্রাকও যাওয়া আসা বন্ধ রয়েছে। আমদানী রপ্তানী ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে পরিবহন ধর্মঘটের।
সড়ক সংস্কারের দাবিতে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছে জকিগঞ্জ যাত্রী কল্যাণ পরিষদসহ যাত্রীরা। ইতিমধ্যে ধর্মঘট প্রত্যাহার করাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করলেও সড়ক সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে না বলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কে জোড়াতালির কাজ শুরু হয়েছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ কাজ পরিদর্শন করে সন্তুষ্ট হননি বলে জানাগেছে। ফলে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছেন শ্রমিকরা।
বিগত ২ বছর থেকে সড়ক ও জনপথের অধিনে চারখাই থেকে আটগ্রাম-কালীগঞ্জ-জকিগঞ্জ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিনে জকিগঞ্জ বাজার থেকে আটগ্রাম পর্যন্ত সড়ক পথ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দিন যত গড়িয়ে যাচ্ছে সড়কের গর্ত ততই বড় পুকুরে রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিন জকিগঞ্জ-সিলেটের সড়কের কোথাও না কোথাও ট্রাক, বাস গর্তে আটকা পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত করে। ভাঙ্গা সড়কে যানবাহন চলাচলে যাত্রী দুর্ভোগ চরম মাত্রায় পৌছেছে। ভাঙ্গা সড়ক দিয়ে আশংকাজনক অনেক রোগী নিয়ে জেলা সদরের হাসপাতালে যাওয়ার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলেও জানাগেছে। ভাঙ্গা এ সড়কে দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত অনেক লোক প্রাণ হারিয়েছেন।
বিগত বছরেও শ্রমিকরা এ সড়কটি সংস্কারের দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলো। পরে জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে প্রত্যাহার করে নেয় তাদের ধর্মঘট। কিন্তু দিন গড়িয়ে গেলেও জেলা প্রশাসনের আশ্বাসের বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবার শ্রমিকরা জেলা প্রশাসনের কোন আশ্বাসকে পাত্তা দিচ্ছে না বলেও একাধিক শ্রমিক জানান। বুধবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ধর্মঘট প্রত্যাহারের কোন ঘোষণা দেননি।
পরিবহন শ্রমিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ সামছুল হক মানিক জানান, সড়কে ভালো করে সংস্কার কাজ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের পরিবহন ধর্মঘট চলবে। দাবী আদায় না করে শ্রমিকরা গাড়ীতে উঠবে না। যাত্রীরাও আমাদের কর্মসূচি একাত্মতা প্রকাশ করেছে। দাবী আদায় হওয়ার পর অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে।