• ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ছেলের রাজনীতির বলি হলেন বাবা-মা ও ভাই

প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৮
ছেলের রাজনীতির বলি হলেন বাবা-মা ও ভাই

স্টাফ রিপোর্টার :
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার পাঁচপাড়া গ্রামে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা মারুফ হোসাইন এর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। স্থানীয় (ক্ষমতাশীন) আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন মারুফের বাবা আব্দুল খালিক, মা সুফিয়া বেগম ও ভাই মো. মাসুম হোসাইন। তাঁদের সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর (২০১৮ সাল) রবিবার আনুমানিক রাত ৯টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ৯ সেপ্টেম্বর (২০১৮ সাল) রবিবার রাত ১১ টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ স¤পাদক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার পাঁচপাড়া গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে বিএনপি নেতা মারুফ হোসাইন বর্তমানে যুক্তরাজ্য বসবাস করেন। তিনি দেশে থাকা অবস্থায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিএনপি নেতা হিসেবে এলাকায়ও তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিলো। জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাঁকে প্রায়ই বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিতো। তাদের অব্যাহত হুমকির কারণে তিনি দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন। মারুফ হোসাইন বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন এমন খবরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর (২০১৮ সাল) রবিবার আনুমানিক রাত ৯টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বসতবাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে না পেয়ে তাঁর বাবা আব্দুল খালিক, মা সুফিয়া বেগম ও বড় ভাই মো. মাসুম হোসাইনকে কুপিয়ে জখম করে। ঘরের আসবাবপত্র ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে পালিয়ে যায়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা মো. মারুফ হোসাইনের ভাই মো. মাসুম হোসাইন কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, আমার ভাইয়ের অপরাধ তিনি বিএনপির রাজনীতি করেন। তার রাজনৈতিক কর্মকা-ের কারণে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা আমার ভাইকে প্রায়ই হত্যার হুমকি দিতো। হামলা-মামলার ভয় দেখাতো। গতকাল আমার ভাই মারুফ দেশে ফিরে আসছেন-এমন খবর পেয়ে ক্ষমতাশীন দলের ১২-১৫ জন লোক আমাদের বাড়িতে এসে আমার ভাইয়ের খোঁজ করতে থাকে। এসময় তারা আমার ভাইকে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমার বাবা-মা ও আমাকে মারধর করে আহত করে। আমি প্রাণ রক্ষার্থে পাশের বাড়ি দৌঁড়ে পালালে ওরা ওই সুযোগে আমাদের বাড়িঘর লুটপাট করে পালিয়ে যায়। বিষয়টি আমি বড়লেখা থানার পুলিশকে মোবাইলে জানালে তারা ব্যবস্থা নেবে বলে আমাকে আশ্বাস দিলেও আমাদের রক্ষার জন্য আসেনি।
এব্যাপারে জানতে স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক নেতার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মারুফ বিএনপির রাজনীতি করে। সে মানুষ ভালো নয়। সে দেশের বাইরে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখি ও ব্যানার ফেসটুন দিয়ে মিছিল মিটিং করে সরকারকে হেয় প্রতিপন্ন করছে। তাকে বার বার সতর্ক করেছি, এভাবে লেখালেখি ও মিছিল মিটিং না করতে। কিন্তু সে শোনেনি। এছাড়া সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণায় আরিফুল হককে সে অর্থ প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করে আমাদের নৌকার প্রার্থীকে নির্বাচনে হারিয়েছে। তবে সে যদি এইবার জাতীয় নির্বাচনেও অর্থ ও পরিকল্পনা দিয়ে সহযোগীতা করার সাহস দেখায় তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।