• ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

নগরীতে সরকার দলীয় নেতাদের মদদে বসেছে অবৈধ পশুর হাট 

প্রকাশিত মে ২১, ২০১৭
নগরীতে সরকার দলীয় নেতাদের মদদে বসেছে অবৈধ পশুর হাট 

সিলেট সুরমা ডেস্ক : প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের হুশিয়ারি সত্ত্বেও ঠেকানো যায়নি অবৈধ পশুর হাট। ঈদের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে নগরজুড়ে বসেছে অবৈধ পশুর হাট। নগরীতে অন্তত ১৫টি অবৈধ পশুর হাটের তথ্য পাওয়া গেছে। সবগুলোর পেছনেই সরকারদলীয় নেতাদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো জেলা ২২টি হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়। অবৈধ হাট বসাতে নিষেধও করে জেলা প্রশাসন। তবে তা না মেনে বসানো হয়েছে অবৈধ হাট।

জানা যায়, সিলেট নগরীতে বৈধ হাট রয়েছে ১২টি। এগুলো হচ্ছে – কোতোয়ালি মডেল থানার কাজির বাজার পশুর হাট, জালালাবাদ থানার শিবের বাজার পশুর হাট, কুড়িরগাঁও (ইসলামগঞ্জ বাজার) পশুরহাট, বিমানবন্দর থানার সাহেব বাজার সুন্নিয়া হাফিজিয়া দাখিল মাদরাসার মাঠে স্থাপিত পশুর হাট, দক্ষিণ সুরমা থানার লালাবাজার পশুর হাট, কামালবাজার পশুর হাট, মোগলাবাজার থানার জালালপুর পশুর হাট, হাজীগঞ্জ বাজার ও রাখালগঞ্জ বাজার পশুর হাট এবং শাহপরান থানা এলাকায় আরও তিনটি অস্থায়ী পশুর হাট বসবে।

এর বাইরে নগরী ও নগরীর আশপাশে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক অবৈধ পশুর হাট। নগরীর লালটিলা, কয়েদির মাঠ, আম্বরখানা (আবাসন হাউজিং), টিলাগড়, শাহী ঈদগাহ (দলদলি চা বাগান), উপশহর, চৌকিদেখি, আখালিয়া, মেন্দিবাগ (জালালাবাদ গ্যাস অফিসের পেছনে), তেররতন, দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল, কদমতলী (ফল মার্কেটের সামনে), লাক্কাতুরা, মাদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা, হাউজিং এস্টেট (দর্শন দেউড়ি), কুমারগাঁও, শাহী ঈদগাহ, রিকাবীবাজার এলাকায় অবৈধভাবে পশুর হাট বসানো হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় রিকাবীবাজারের অবৈধ পশুর হাটে পুলিশের সাথে ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আর বিকেলে দলদলি চা বাগানের অবৈধ হাট উচ্ছেদ করে সদর উপজেলা প্রশাসন।

তবে একটি হাট উচ্ছেদ করলেও বাকি অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদে নেই প্রশাসনের কোনো তৎপরতা।

জানা যায়, বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা পশুর হাটের নেতৃত্বে রয়েছে সরকার দলীয় প্রভাবশালী কিছু নেতা। টিলাগড় পয়েন্টে বিশাল সামিয়ানা টানিয়ে বাঁশ বেঁধে তৈরি করা পশুর হাটের নেপথ্যে উঠে এসেছে স্থানীয় কাউন্সিলরের নাম।

অন্যদিকে নগরীর প্রবেশ মুখ কুমারগাঁও তেমুখী এলাকায় গড়ে তোলা অবৈধ অস্থায়ী পশুর হাটের নেতৃত্বে রয়েছেন সরকারদলীয় স্থানীয় কিছু নেতা।

এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, বৈধ পশুর হাট ছাড়া রাস্তায় গরুর হাট বসানো যাবে না। এমন নির্দেশ ঢাকা থেকে পাওয়ার পর বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়েছে। এখন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত তারাই নেবেন।

তবে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব জানান, নগরীর কাজিরবাজারসহ ১১টি হাট বসানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর বাইরে কোথাও হাট বসতে দেয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে যদি কোন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। আর এতে আমাদের সহযোগিতা চাওয়া হয় আমরা অবশ্যই অবৈধ পশুর হাট বন্ধে উদ্যোগ নেব।

কাজির বাজার পশুর হাটের ম্যানেজার সাহাদাত হোসেন লুলন অভিযোগ করে বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে করে সিলেটে গরু নিয়ে আসেন বেপারীরা। গরুবাহী ট্রাক বিভিন্ন সড়ক দিয়ে প্রবেশ করার পরপরই মোটরসাইকেল দিয়ে ট্রাককে ঘিরে ধরে অথবা বিভিন্ন লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে জোরপূর্বক হুমকি-ধামকি দিয়ে অবৈধ বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়।