• ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সিলেটে মুক্তিযোদ্ধা কন্যা হত্যা’:১৫সেপ্টেম্বর শুনানী

sylhetsurma.com
প্রকাশিত আগস্ট ২৬, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক::::: সিলেটে মুক্তিযোদ্ধা কন্যা সাজনা ‘হত্যাকান্ড’র ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও শুনানীর জন্য আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। এদিকে ঘটনায় পুলিশের অপমৃত্যু মামলা গ্রহনের বিরুদ্ধে ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অভিযোগ ও তদন্তের শেষ নেই। বৃহস্পতিবার পৃথক দৃুটি অভিযোগের তদন্ত করেছেন সিলেট মেট্রেপলিটন পুলিশ (উত্তর)-এর এসি এডমিন মো. ইসমাইল। এসি মো. ইসমাইল তার কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের ডেকে নেন এবং তাদের বিস্তারিত বক্তব্য শোনেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বরাবরে দেয়া অভিযোগ ও এসএমপি’র ডিসি (উত্তর) বরাবরে দেয়া অভিযোগ দু’টি তার তদন্তে দেয়া হয়েছে। অপরদিকেথানা পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা বরাবরে দেয়া আরেকটি অভিযোগের তদন্ত করছেন জালালাবাদ থানার এসি মাইনুল আবসার। সূত্রমতে বাংলাদেশ পুলিশের আইজি বরাবরেও আরেকটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। যেটার তদন্ত এখনো শুরু হয়নি। অচিরেই এর তদন্ত সিলেটে আসছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অভিযোগে প্রকাশ, গত ২২জুন মুক্তিযোদ্ধা কন্যা সাজনা বেগম স্বামীর বাড়িতে মারা যায়। খবর পেয়ে সাজনার পিতৃপরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্তিত হয়ে এটাকে জ্বলন্ত হত্যাকান্ড বলে অভিযোগ করেন। এ সময় এসএমপি’র জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন সাজনার পিতা বীর মক্তিযোদ্ধা তজমূল আলীকে ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন। পরে দরজা বন্ধ করে অলিখিত দুটি সাদা কাগজে সাজনার বোন নেহার বেগম, সাজনার ভাই হেলাল ও মুজিরের  জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ উঠিয়ে চলে আসে পুলিশ। ঘটনাস্থলে মৃতার সুরতহাল বা কোন অভিযোগ লিখেনি পুলিশ। পরে স্বজনদের আড়ালে তাদের স্বাক্ষর করা সাদা কাগেজে  মিথ্যা বয়ানে ও বিকৃত আকারে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিরেট ওসমানী মেডিকেল কলেলজ মর্গে এবং স্বাক্ষরিত অপর একটি  স্দাা কাগজে সাজনার বোন নেহার বেগমের অজান্তেই তার নামে একটি অপমৃত্যু মামলার দরখাস্ত লেখিয়ে থানায় থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজুকরে নেয় পুলিশ। লাশের ময়না তদন্ত ও দাফন শেষে সাজনার বোন নেহার বেগম জালালাবাদ থানায় মামলার এজাহার নিয়ে গেলে ওসি আখতার হোসেন তার এজাহার গ্রহনে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, এ ঘটনায় তাকে বাদী করিয়ে  আগেই একটি অপমৃত্যু মামলা (নং-১১/১৬) রেকর্ড করা হয়েছে। দ্বিতীয়বার আর কোন মামলা গ্রহন করতে পারবে না পুলিশ। এটা শোনে নেহার বেগমের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। তিনি বলেন, আমার বোনের মৃত্যুর ঘটনায় আমিতো এর আগে কোন মামলাই করিনি। সুরতহাল করতে সাদা (অলিখিত) কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে মাত্র। তখন ওসি আখতার অপমৃত্যু মামলার একটি ফটোকপি হাতে দিয়ে তাকে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিযে তাড়িয়ে দেন। সাজনার স্বজনদের অভিযোগ সাজনার সুরতহাল রিপোর্ট তাদের সামনে লেখা হয়নি। মৃতার প্রকৃত অবস্থা আড়াল করে বিকৃত ও মিথ্যে বয়ানে সুরতহাল রিপোর্ট লিখে ময়না তদন্তের জন্য মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফলশ্র“তিতে মেডিকেল থেকে সুরতহাল ভিত্তিক অনুমান নির্ভর ময়না তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে সাজনা ‘হত্যাকান্ড’র ঘটনায় নেহার বেগম সিলেট মেট্রেপলিটন ম্যজিষ্ট্রেট আদালতে স্বামীসহ ওই পরিবারের ৫জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। কিন্তু এর আগে অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়ে যাওয়ায় মামলাটি স্থগিত করে দেন আদালত। ফলে সাজনা ‘হত্যাকান্ডে’র ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বিচারবঞ্চিত হয়েছে । বিচার বঞ্চিতের এ ঘটনায় এসএমপির জালালাবাদ থানার ওসি আখতার, এসআই আখতারুজ্জামান ও কনেষ্টবল রেজা মাহমুদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
অপরদিকে সাজনার মৃত্যুর ঘটনায় সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যজিষ্ট্রেট আদালতে দায়ের হওয়া অপমৃতু মামলাটি গত১৬আগস্ট নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়েছে। ফলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতে নেহার বেগমের দেয়া মোমলাটি (সিআর-১২০/১৬) জালালাবাদ থানার ওসি বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। আদারতের আদেশ ও মামলার কপি বৃহস্পতিবার (২৫আগস্ট) জালালাবাদ থানায় পৌছানো হয়েছে। আদালত অপমৃত্যু মামলার প্রতিবেদন দাখিলের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশপাশি আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর শুনানীর জন্য ধার্য করেছেন।