• ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সাম্প্রদায়িক হামলা

sylhetsurma.com
প্রকাশিত নভেম্বর ৬, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক
রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হিন্দু মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলার ঘটনায় শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে আরও ৩৩ জনকে আটক করেছে করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট আটকের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৪ জনে। এর আগে গত ছয়দিনে ১১ জনকে আটক করা হয়েছিল।
নাসিরনগর থানার নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু জাফর আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই সহগ্রাধিক অজ্ঞাতনামাকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কাজল জ্যোতি দত্ত ও নির্মল চৌধুরী।

নেত্রকোনায় ফের মন্দিরে
হামলা,
মাত্র একদিনের ব্যবধানে নেত্রকোনায় মন্দিরে আবারয় হামলা চালানো হলো। শনিবার (৫ নভেম্বর) ভোরে জেলা শহরের সাতপাই এলাকায় একতা সংঘের কালী মন্দিরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলা চলাকালীন সময়ে এলাকাবাসীরা একজন হামলাকারীকে ধরে পুলিশে দিয়েছে।
আটক ঐ ব্যক্তির নাম সুমন ইসলাম (৪০)। তার বাড়ি নরসিংদী জেলায় বলা হলেও বিস্তারিত পরিচয় এখনো জানা য়ায়নি।
একতা সংঘের মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ সরকার যীশু জানান, ‘প্রতিদিনের মতো মন্দির সংলগ্ন নিজের বাসায় ভোররাতে কীর্তন করার সময় এক কিশোর দৌড়ে এসে তাকে খবর দেয় যে, মন্দিরে হামলা হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে এলাকার নারী-পুরুষদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন লাগানোর সময় এক ব্যক্তিকে আটক করি।’ এ সময় মন্দিরের ভেতর থেকে প্যান্ট-শার্ট ও মাথায় টুপি পরা আরও চারজনের মতো যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায় বলে দাবি করেছেন তিনি।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, ‘শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে একতা সংঘের কালী মন্দিরে তিন/চারজন মিলে মন্দিরের দরজা খুলে ভেতরে ঢোকে। তারা মন্দিরের কালী প্রতিমার মাথার চূড়া ও মহাদেবের হাত ভেঙে ফেলে এবং তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।’
‘এ সময় এক কিশোর দেখতে পেয়ে এলাকায় খবর দেয়। পরে এলাকাবাসী গিয়ে মন্দিরের ভেতর থেকে একজনকে ধরে ফেলে। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকিরা দৌড়ে পালিয়ে গেছে।’ ওসি আরও জানান, আটক সুমনকে থানায় ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জেলা প্রশাসক মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনার পরপর মন্দিরে যান নেত্রকোনা পৌরসভার সাবেক মেয়র প্রশান্ত কুমার রায়, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মঙ্গল সাহা রায়, সাধারণ সম্পাদক সুব্রত রায় মানিক, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি সিতাংশু বিকাশ আচার্য, জেলা জাতীয় হিন্দু মহাজোট সভাপতি তপন সাহা ও সম্পাদক দেবদুলাল তালুকদার।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মঙ্গল সাহা রায় বলেন, ‘একের পর এক হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে। চলছে নির্যাতন। আমরা ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ।’এসব বন্ধ না করলে কঠোর আন্দোলনে হুশিয়ারি দেন তিনি। এর আগে গত বুধবার রাত ও বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের সাকুয়া ইন্দ্রপুর গ্রামে স্কুল শিক্ষক পরিচয় তালুকদারের পারিবারিক কালী মন্দিরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
তারা মন্দিরের কালী প্রতিমা গুঁড়িয়ে দেয়। বাড়ির ভেতরে থাকা চারটি তুলসী গাছ উপড়ে ফেলে। তাছাড়া বাড়ির সামনে পুকুর পাড়ে থাকা পারিবারিক শ্মশানের চারটি স্মৃতিচিহ্ন খোঁড়াখুঁড়ি ও তছনছ করে। গত কয়েক দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, ছাতক, যশোর, বরিশাল, ফরিদপুর, ঠাকুরগাঁও, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।