• ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন চালু হচ্ছে জানুয়ারিতে

প্রকাশিত ডিসেম্বর ২, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক:::::: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটায় নির্মিতব্য দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে এটি চালু হতে যাচ্ছে। দেড় হাজার জিবিপিএস ক্ষমতার এই সাবমেরিন চালু হলে গ্রাহকদের ব্যয় কমার পাশাপাশি ইন্টারনেট সেবায় চলমান সমস্যার সমাধান হবে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক সাবমেরিন যোগাযোগ ব্যবস্থার বহুমুখীকরণ, দেশের অতিরিক্ত ব্যান্ডউইডথ (ডাটা ও ভয়েসের ক্ষেত্রে) চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সফটওয়্যার রফতানি, ডাটা এন্ট্রি ও ফ্রি-ল্যান্সিংসহ সার্বিক তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উন্নত সেবা নিশ্চিত হবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, শেষ পর্যায়ে থাকা কুয়াকাটা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত তিনশ’ কিলোমিটার ব্যাকবোন তৈরি হলেই পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে দেশের দ্বিতীয় এ সাবমেরিন ক্যাবল।

প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলের চেয়ে আটগুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন এ স্টেশনটি চালু হলে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ইন্টারনেটের আওতায় আসবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইডথ রফতানির মাধ্যমে বাংলাদেশ বড় অংকের অর্থ উপার্জনেরও সুযোগ পাবে।

এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘অনেকের অভিযোগ রয়েছে ইন্টারনেট  অনেক ধীরগতির। এটা চালু হলে যদি আমরা যদি এর অর্ধেকও ব্যবহার করতে পারি, তাহলে এই গতির সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’

তবে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলকে ইন্টারনেটের আওতায় এনে, উদ্ধৃত ব্যান্ডউইথ রফতানিতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় সারাদেশে দ্রুতগতির ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা দেয়ার প্রত্যাশা ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবের।

আর টেলিকম বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এ স্টেশন চালু হলে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে। এর আগে, কক্সবাজারের নির্মিত প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল থেকে দুশো’ জিবিপিএস ব্যান্ডউউথ সরবরাহ করছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।

২০১৩ সালে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার মাইটভাঙা এলাকায় ১০ একর জমির ওপর শুরু হয় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন প্রকল্পের কাজ। ইতোমধ্যে সাগরের তলদেশ দিয়ে প্রায় ২৫ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল স্থাপনের কাজ শেষ করেছে বিএসসিসিএল।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সাগরের নিচ দিয়ে ফ্রান্স থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ২০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে। ইউরোপ থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে আসা সঞ্চালন লাইন সংযুক্তির জন্য ল্যান্ডিং স্টেশন স্থাপনের কাজও শেষ পর্যায়ে।

এসইএ-এমই-ডব্লিউই ৫ প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মনন আশরাফ জানান, এ বছরের শেষ দিকে পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর জানুয়ারিতে ল্যান্ডিং স্টেশনের সঙ্গে এর সংযোগ স্থাপন করবে বিএসসিসিএল। বিচ ম্যানহোল থেকে ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল স্থাপন করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় কনসোর্টিয়ামের পক্ষ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ক্যাবল সংযোগ স্থাপন করে দেওয়ার পর সেখান থেকে বাড়তি তিনশ’ কিলোমিটার ক্যাবলের মাধ্যমে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশন পর্যন্ত সংযোগ নিয়ে যাওয়া হবে।

প্রকল্পের ফাংশনাল ভবনের মূল স্থাপনা, ডরমিটরিসহ অবকাঠামোগত কাজ ছাড়াও শেষ হয়েছে নিজস্ব ইলেকট্রিক্যাল পোস্ট নির্মাণ কাজও। বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি ৬’শ ৬০ কোটি টাকার দেড় হাজার জিবিপিএস ক্ষমতার এ প্রকল্পে যৌথভাবে অর্থায়ন করছে বিটিসিএল ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি)।