• ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সৌদিতে ১৫ শিয়া মুসলিমের মৃত্যুদন্ড

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৬, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক
ইরানের পক্ষে ‘গুপ্তচরবৃত্তি’র অভিযোগ তুলে ১৫ শিয়া মুসলিমকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে সৌদি আরবের এক আদালত। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি খবরটি নিশ্চিত করেছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রদ্রোহ-গুপ্তচরবৃত্তি-তথ্যপাচারের অভিযোগে ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সৌদি আদালত। অভিযুক্তদের ৩০ জন ছিলেন শিয়া ধর্মাবলম্বী। তাদের মধ্যে ১৫ সৌদি নাগরিককে মৃত্যুদন্ড দিলো আদালত।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে রিয়াদের বিশেষ অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হয় ওই ৩২ জনকে। ২০১৩ সাল থেকে তারা আটক রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। এদের মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিক। একজন ইয়েমেনের, অপরজন ইরানের।
বিচার শুরুর সময় বলা হয়েছিলো, অভিযুক্তদের মধ্যে থাকা শিয়া ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় নেতা, রাজনীতিক, ব্যাংকার ও বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ছিলেন। সৌদি আরবের উত্তারাঞ্চলের শিয়া অধ্যূষিত অঞ্চলে এদের বসবাস। তবে এবার মঙ্গলবার এসে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া টেলিভিশন বলছে, মঙ্গলবার যাদের শাস্তির রায় দেওয়া হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই সৌদি সামরিক বাহিনীর সদস্য।
২ কোটি ৮০ মানুষের দেশ সৌদি আরবে শিয়া ধর্মাবলম্বীদের পরিমাণ ১০ থেকে ১৫ শতাংশ। সৌদি রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় বিপুল পরিমাণ বৈষম্য এবং কখনও কখনও নির্যাতনেরও শিকার হয়ে থাকে। জনশিক্ষা, বিচারব্যবস্থা, সরকারি চাকরি কিংবা ধর্মীয় স্বাধীনতায় কাঠাবোবদ্ধ বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকেন তারা।
২০১১ থেকে ২০১৪ সালে সৌদি আরবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ২০ শিয়া মুসলিমের প্রাণহানি ঘটে। ২ জানুয়ারি ২০১৬ সৌদি কর্তৃপক্ষ ৪৭ জনের শিরñেদ করে। শিরñেদকৃতদের মধ্যে প্রখ্যাত শিয়া নেতা শেখ নিমরও ছিলেন। ওই ঘটনা তখন নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। পাশাপাশি শিয়া-সুন্নি ও সৌদি-ইরান বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। দুই দেশের কূটনৈতিক টানাপোড়েন তখন উদ্বেকজনক পরিস্থিতিতে চলে যায়।
নিমর ছিলেন শান্তিপূর্ণ সংস্কারের একজন অব্যাহত প্রবক্তা। তিনি সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের। তিনি অবশ্য সমালোচক ছিলেন সৌদি শাসকশ্রেণীর। কিন্তু কোনো সন্ত্রাসী কাজে জড়িত থাকার কোনো রেকর্ড তার ছিল না। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৪০টি দেশ তাদের আইন ও অনুশীলনে মৃত্যুদন্ড বাতিল করেছে। অপরদিকে সৌদি আরবে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত লোকের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বেড়েছে।