• ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কমলগঞ্জে নাচে-গানে সাঙ্গ হলো ঐতিহ্যবাহী মণিপুরি মহারাসলীলা

sylhetsurma.com
প্রকাশিত নভেম্বর ১৬, ২০২৪
কমলগঞ্জে নাচে-গানে সাঙ্গ হলো ঐতিহ্যবাহী মণিপুরি মহারাসলীলা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আনন্দ-উৎসাহে ঢাক-ঢোল, খোল-করতাল আর শঙ্খ ধ্বনির মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ ও তার সখি রাধারলীলাকে ঘিরে কার্তিকের পূর্ণিমা তিথিতে নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঊষালগ্নে সাঙ্গ হলো মাধবপুর ও আদমপুরে মণিপুরি সম্প্রদায়ের প্রধানতম ধর্মীয় উৎসব মহারাসলীলা।

মণিপুরী সম্প্রদায়ের এ বৃহত্তম উৎসব উপলক্ষে মণিপুরি ললিতকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মণিপুরি তাতঁবস্ত্র প্রদর্শনী ও শিববাজার এলাকায় বিশাল মেলা বসে। উভয়স্থানে রাখালনৃত্যের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল রাসলীলা। রাসোৎসবে জাতি, ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ ভুলে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সব ধরনের সুবিধা বিদ্যমান থাকায় এখানকার রাসলীলা বড় উৎসবে রূপ নিয়েছিল। শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজির হয়েছিল নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ নানা পেশার হাজারো মানুষ। তাদের পদচারণে দুপুর থেকে মুখর হয়ে ওঠে মণিপুরি পল্লি। শনিবার ঊষালগ্নে এ উৎসব শেষ হয় সূর্যোদয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।

মাধবপুর (শিববাজার) জোড়ামন্ডপ প্রাঙ্গনে মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের উদ্যোগে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিরা ১৮২ তম বার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসুচী হয়। রাত ৮টায় মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের সভাপতি প্রকৌশলী যোগেশ্বর সিংহের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ ও নির্মল এস পলাশের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো: ইসরাইল হোসেন, পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম-সেবা, ল²ীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পদ্মাসন সিনহা, মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন রায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীন, ওসি সৈময়দ ইফতেখার হোসেন প্রমুখ।

আদমপুরে মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সে রাসোৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ জানান, মাধবপুর জোড়ামন্ডপ রাসোৎসব

সিলেট বিভাগের মধ্যে ব্যতিক্রমী আয়োজন। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার আগমন ঘটে।

 

বর্ণময় শিল্পসমৃদ্ধ বিশ্বনন্দিত মণিপুরি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবে সবার মহামিলন ঘটে। রাত ১২টার দিকে শিববাজারের জোড়া মন্ডপে (পরস্পর সংলগ্ন তিনটি মন্ডপ) এবং অন্যদিকে তেতইগাঁওয়ে সানা ঠাকুরের মন্ডপে (বর্তমানে সেখানেও দুটি ভিন্ন মঞ্চে রাস হয়) শুরু হয় এই উৎসবের মূল পর্ব মহারাস। মণিপুরিদের রাসলীলার অনেক ধরন। নিত্যরাস, কুঞ্জরাস, বসন্তরাস, মহারাস, বেনিরাস বা দিবারাস। শারদীয় পূর্ণিমা তিথিতে হয় বলে মহারাসকে মণিপুরিরা পূর্ণিমারাসও বলে থাকে।