• ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নির্যাতন

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ৯, ২০১৬

শরীফ আহমদ,দক্ষিণ সুরমা : বিয়ের দু’ বছরের মাথায় যৌতুকের জন্য মধ্যযুগিয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার হতে হলো তরুণী গৃহবধূ ফারজানা বেগম (২৩) কে। সারা দেশে যখন কলেজ ছাত্রী খাদিজার উপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং হামলাকারীর ফাঁসির দাবীতে ঝড় বইছে ঠিক সেই সময় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হতে হলো সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের গৃহবধূ ফারজানাকে। সে বর্তমানের সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজে (ওসিসিতে) চিকিৎসাধীন। এ ব্যাপারে গত ৮ অক্টোবর শনিবার ফারজানা বেগম বাদী হয়ে স্বামী মোঃ আজমল আলীকে বিবাদী করে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ নং- জি.আর ৪৬১, তাং- ৮/১০/২০১৬ইং।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলাধিন গহরপুর এলাকার নশিওপুর গ্রামের হাজী আব্দুল মতিনের মেয়ে ফারজানা বেগমের সাথে প্রায় ২ বছর আগে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মৃত হাজী ধন মিয়ার ছেলে আজমল আলী সাথে মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে আজমল নিজে লন্ডন প্রবাসী ও অবিবাহিত সহ বিভিন্ন মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে ফারজনা সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। প্রেমের ফাঁদে পড়ে ফারজানা পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের অমতে পালিয়ে এসে আজমলকে বিয়ে করে। বিয়ের পর ফারজানা জানতে পারে আজমল ইতিপূর্বে একাধিক বিবাহ করেছে এবং ছেলে-মেয়ে আছে। এছাড়াও আজমল লন্ডন হতে বিতাড়িত হয়ে চলে এসে, আর সে লন্ডন যেতে পারবে না। এতো কিছু জানাপরও ফারজানা নিরূপায় হয়ে সংসার করতে থাকে। আজমল বেকার, কোন কাজ কর্ম করে না। বিয়ের পর থেকেই আজমল শ^শুর বাড়ীতে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক হিসেবে আনার জন্য ফারজানার উপর চাপ দিতে থাকে। ফারজানা পিতা-মাতার অমতে পালিয়ে বিয়ে করায় তার পক্ষে টাকা আনা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। এরপর থেকে যৌতুকের কারণে প্রায়ই মারপিট সহ নির্যাতন করে আসছে আজমল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৪ অক্টেবার মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ২টায়  স্বামী আজমল যৌতুকের দাবীতে ফারজানাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে শরীরি বিভিন্ন স্থানে ফুলা জখম করে ও খুর দিয়ে হাতে কাটা জখম করে এবং এক পর্যায়ে মাথার চুল পর্যন্ত কেটে নিয়ে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রাখে।  খবর পেয়ে নির্যাতিতার ভাই সুমন আহমদ থানা পুলিশের সহায়তায় ফারজানকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমে ওয়ার্ডে ভর্তি করে, পরে ওসিসিতে বদলী করা হয়। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ফারজানা সুখের আশায় পিতা-মাতার মায়া ত্যাগ করে সকল নির্যাতন সহ্যকরে স্বামীর সংসার করে আসছিলো, কিন্ত সেই সুখও তার কপালে জোটলনা।