• ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

১৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ৬, ২০১৪

স্টাফ রিপোর্টার: দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে ছাত্রলীগ শিবিরের সংঘর্ষে আহত এহসান গতকাল ভোরে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় গতকাল রাতেই দক্ষিণ সুরমা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কালাম হোসেন বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০৫/৪৫ তাং ০৫/০১/২০১৪ ইং। মামলার আসামীরা হলেন: দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দির আবরার আলীর পুত্র মাওলানা লোকমান আহমদ, দক্ষিণ সুরমার হকিয়ারচরের মৃত বশির মিয়ার পুত্র মাস্টার আব্দুল কুদ্দুছ, বলদীর মনির উদ্দিনের পুত্র নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, বিশ্বনাথ দেওকলসের মৃত এসএম মোক্তার হোসেনের পুত্র আখতার ফারুক, দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দির মৃত মোঃ আব্দুস সালামের পুত্র ফখরুল ইসলাম, বিশ্বনাথের চান্দভরাং গ্রামের-বর্তমানে নগরীর কোতোয়ালী থানার ২৯/৬, ইরশাদ মঞ্জিল, জালালাবাদ, আম্বরাখানা এলাকার বাসিন্দা মৃত আশরাফ উদ্দিন চৌধুরীর পুত্র সুহেল আমিন চৌধুরী, বিয়ানীবাজারের তুরাব আলীর পুত্র ইমরান আহমদ, টুকেরবাজারের মৃত সবিল মিয়ার পুত্র কাওসার আলী, মৌলভীবাজারের আমানুল মোমিনের পুত্র এহসানুল মোমিন, ছাতকের শফিকুর রহমানের পুত্র সৈয়দ কাওছার আহমদ, নগরীর শিবগঞ্জের মাওলানা আকদ্দছ আলীর পুত্র মিজানুর রহমান,নগরীর উপশহরের মাহবুব হোসেনের পুত্র এহসান মাহবুব, ওসমানীনগরের মৃত আব্দুল কায়ুম এর পুত্র মো: নজরুল ইসলাম, শেখঘাটের আব্দুল কাদেরের পুত্র লোকমান আহমদ ও দক্ষিণ সুরমার মৃত আব্দুল বারীর পুত্র মো: আব্দুস শহীদ।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী দক্ষিণ সুরমা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কালাম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জামায়াত শিবির পরিকল্পিতভাবে তাদের মিছিলে হামলা চালায়। এহসান হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
অন্যদিকে উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের শান্তিপ্রিয় মিছিলে ছাত্রলীগ হামলা চালায়। এহসানকে তারাই গুলি করে হত্যা করেছে। আমাদের সাথে কোন আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। আমাদেরকে ফাসাতেই তারা তাদের নিজের কর্মীকে হত্যা করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই আব্দুল আউয়াল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এর মধ্যেই তারা এজাহারভূক্ত ৯ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছেন। বাকীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এহসানকে কে বা কারা হত্যা করেছে তা তিনি এখনও নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে ধৃত আসামীদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে করলে মূল কারণে বেরিয়ে আসবে।
উল্লেখ্য, মহানগর ছাত্রলীগ ও তার অঙ্গসংগঠন গত শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে দক্ষিণ সুরমায় এক সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে শেষে বিকেল ৩টার দিকে মিছিলটি দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে। অন্যদিকে দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলে সরকারের বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াত শিবির মিছিল শেষে সমাবেশে করছিল। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের মিছিল চন্ডিপুল পৌঁছা মাত্রই সেখানে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিছু বুঝে উঠার আগেই উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। ককটেল বিস্ফোরনসহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের গুলির শব্দে এলাকায় আতংক নেমে আসে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাঠ বন্ধ করে পালিয়ে যায়। উভয়পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এলাকা রনক্ষেত্রে পরিনত হয়। খবর পেয়ে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা চালায়। পুলিশের উপস্থিতি ঠের পেয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই ৯ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় । মারাত্মক জখমী রক্তাক্ত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী এহসান উদ্দিন সহ অন্যন্য জখমীদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। জখমীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু গুলিবিদ্ধ এহসান গতকাল ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ডাক্তার জানান, এহসানের মাথায় ও বুকে গুলির আঘাতে মারাত্মক রক্তক্ষরণ হওয়ায় আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তবে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।