সিলেট সুরমা ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা নিয়ে’ ঢাকা থেকে ‘পালিয়েছেন’ বলে খবর পাচ্ছেন তারা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি এবার ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের’ রেকর্ড করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি, গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ছে, বিএনপি মনোনয়ন বাণিজ্যে এবার রেকর্ড করেছে। এই যে ঋণখেলাপির কারণে এত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে, তারপরও তাদের ৫৫৫ জন রয়েছে। এটা কি মনোনয়ন বাণিজ্য নয়?
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের জন্য এবার যে ৩০৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল, তার মধ্যে ৭৮৬টি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে বাদ পড়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের তিনটি এবং বিএনপির ১৪১টি মনোনয়নপত্র রয়েছে।
বাতিলের খাতায় বিএনপির নাম বেশি এল কেন- এই প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের ২৭৮ জনের মনোনয়ন টিকেছে, আর বিএনপির টিকেছে ৫৫৫ জন। তাহলে মনোনয়ন কার বেশি টিকেছে? নির্বাচনে তো অংশগ্রহণ করবে তিনশ জন, এর মধ্যে ঐক্যফ্রন্টকে দিতে হবে না? প্রার্থী হবে তিনশ, এখানে ৫৫৫ জন কোথা থেকে এল?
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কেউ কেউ ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা নিয়ে’ ঢাকা থেকে ‘পালিয়েছেন’ বলে খবর পাচ্ছেন তারা।
সরকার নির্বাচন কমিশনকে ‘পুতুল নাচের’ আসর বানিয়ে ফেলেছে বলে যে অভিযোগ বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী করেছেন- সে বিষয়েও কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
এর জবাবে কাদের বলেন, তাদের মনোনয়ন প্রক্রিয়াটাই একটা পুতুল নাচের খেলা। সরকার কেন করবে? নির্বাচন কমিশন কি সরকার? নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ আচরণ করে যাচ্ছে।
লন্ডন থেকে তারেক রহমানের নির্দেশেই বিএনপির ‘পুতুল নাচ’ চলছে দাবি করে কাদের বলেন, যেমনি নাচাও তেমনি নাচে, পুতুলের কী দোষ? রশিটা লন্ডন থেকে টানছে। কামাল হোসেন তো নামকাওয়াস্তে নেতা, অনেক দু:খে কষ্টে নির্বাচনটাই করছেন না। নেতাও নেই, মাথাও নেই। এই দলকে কে ভোট দেবে! মানুষ জিজ্ঞেস করবে- কে হবেন প্রধানমন্ত্রী, কী জবাব দেবেন মির্জা ফখরুল সাহেব?
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের যে অভিযোগ বিএনপি এনেছে, তাও অস্বীকার করেন সরকারের সেতুমন্ত্রী কাদের। তিনি বলেন, যখন নির্বাচন কমিশন তাদের পক্ষে না থাকে, তখন তো নির্বাচন কমিশন সৎ মা হয়ে যায়। এখন নির্বাচন কমিশন যদি তাদেরকে গ্যারান্টি দিতে পারে যে আগামী নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করবে, তাহলে তাদের কাছে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ হবে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিবকে পদে পরিবর্তনের কারণে মহাজোটের প্রার্থী মনোনয়নে কোনো টানাপড়েন সৃষ্টি হবে কি না- এ প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিবের বহিষ্কারের বিষয়টা তাদের ব্যাপার, এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। আর এ নিয়ে মহাজোটের যে ঐক্য প্রক্রিয়া, এখানে প্রভাব পড়বে না।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।