• ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ৯, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক :::
চীন সরকারের অর্থায়নে হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রোববার (৯ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে বাংলাদেশের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ও চায়না হার্বার ইঞ্জিনিয়ার এর মধ্যে এ চুক্তি সই হয়। প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি জি টু জি ভিত্তিতে বাস্তবায়ন হবে।
বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সড়ক ও জনপথের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান ও চীনের পক্ষে স্বাক্ষর করেন চায়না হার্বার ইঞ্জিনিয়ার কোম্পানীর প্রেসিডেন্ড থাকংশিয়াও লিয়াং।
এসময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত অর্থনীতিবিদ ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন সিদ্দিকীসহ বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তিন ঘণ্টারও কম সময়ে ঢাকা-সিলেটে যাতায়াত করা যাবে। বর্তমানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যাতায়াতে ৬ঘন্টারও বেশি সময় লাগে। ২১৬ কিলোমিটার চারলেন সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি দু’টি আলাদা সার্ভিস লেন থাকবে, যেখানে ধীরগতির গাড়ি চলাচল করবে। প্রকল্পের আওতায় ব্রিজ নির্মিত হবে ৭০টি। চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, এ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। চীন দ্রুতগতিতে কাজটি করবে। ২০১৮ সালের শেষ দিকে অথবা ২০১৯ সালের শুরুর দিকে সড়কটি চালু হবে বলে আশা করা যায়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটবাসীকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের চুক্তি আজ স্বাক্ষরিত হলো। এ স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরে সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে।
মন্ত্রী দু:খ প্রকাশ করে বলেন, চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার প্রস্তাব করেছিলো। কিন্তু, তখনকার সময়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী আগ্রহী ছিলেন না। ফলে সিলেট অঞ্চল অনেক পিছিয়ে পড়ে। সেসময়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সিলেটবাসীর প্রতি অন্যায় করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের সিলেটকে রাজহাসের মতো উল্লেখ করে বলেন, সিলেট দেশকে অনেক কিছু দিয়েছে। জাতীয় স্বার্থে সিলেটের উন্নয়ন জরুরি।
তিনি বলেন, সিলেট বাংলাদেশের উন্নয়নের অপরিহার্য অংশ। সিলেটকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি সম্ভব নয়। আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থরা যত উন্নয়ন ঘটাবো ততই উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বেগবান হবে।
সিলেট দেশকে দুধের গাভীর মতো অনেক দুধ দেয়- মন্তব্য করেন যোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, সিলেট থেকে জাতীয় অর্থনীতিতে রেভিনিউ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রয়েছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল। প্রবাসীরা যুগ যুগ ধরে জাতীয় উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখছেন।
মন্ত্রী বলেন, সিলেট গ্যাস, পাথর ও বালু সমৃদ্ধ অঞ্চল। এক্ষেত্রে সিলেট একক যোগান দিচ্ছে। এগুলো ছাড়া দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন সম্ভব হবে না।
সিলেটে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অঞ্চল প্রাকৃতিকভাবে অপূর্ব সুন্দর। পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে অবশ্যই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি। এতে সিলেটে বিদেশী ও দেশী বিনিয়োগ বাড়বে। পর্যটকরা আকৃষ্ট হবে এবং মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে।
জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ মিশনের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. একে আব্দুূল মোমেন বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার দাবি সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী অঙ্গীকারে এটা বলেছিলেন। তবে কাজটি শুরু হতে দেরি হয় অর্থায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে। এডিবি না চীন সরকার এর অর্থায়ন করবে এ নিয়ে কয়েক দফা সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) কয়েক দফা চিঠি চালাচালি করে।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, এখন শুরু হলে মাত্র ৩ বছর পরই চার লেন হয়ে যাবে মহাসড়কটি। তখন পর্যটন ও অর্থনীতি দু’টোই বদলে যাবে সিলেটের। বাড়বে জিডিপিও।