• ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

রাজীবের ভাইদের ক্ষতিপূরণে আদেশ স্থগিত, তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশিত এপ্রিল ২২, ২০১৫

সিলেট সুরমা ডেস্ক : বাসের রেষারেষিতে হাত হারানোর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।একইসঙ্গে ওই ঘটনায় দুই বাস কর্তৃপক্ষের মধ্যে কারা দায়ী তা তদন্ত করতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই কমিটিকে ৩০ জুনের মধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। পরে প্রতিবেদনের আলোকে হাইকোর্ট রাজীবের দুই ভাইকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ দেবেন। আজ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।গতকাল বিষয়টি নিয়ে শুনানি শেষে আজ আদেশের দিন ধার্য করে দেয়া হয়।
আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ বি এম বায়জিদ, বাস মালিকদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আবদুল মতিন খসরু এবং রাজীবের পরিবারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।গত ৮ মে রাজীবের দুই ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশটি দিয়েছিলেন। এরপর কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে বাস কর্তৃপক্ষ আবেদন করে।গত ৩ এপ্রিল দুই বাস চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোয় শিকার হন রাজীব। দুই বাসের চাপে হাত কাটা পড়ে রাজীবের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ৪ এপ্রিল রিট আবেদন করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রাজীবের চিকিৎসার খরচ স্বজন পরিবহন মালিক এবং বিআরটিসিকে বহনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এক কোটি টাকা দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে কার্যকর করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইন সংশোধন বা নতুন করে বিধিমালা প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। রাজীব ১৬ এপ্রিল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে মারা যান। এরপর ৬ মে এ তথ্য আদালতকে অবহিত করেন আইনজীবী।গত ৮ মে হাইকোর্ট বেঞ্চ রাজীবের দু’ভাইকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বিআরটিসি ও স্বজন পরিবহনের মালিককে নির্দেশ দেয়। এর মধ্যে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ একমাসের মধ্যে দিতে বলা হয় দুই বাস কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু বিআরটিসি ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ১০ মে আপিল আবেদন করে। ১৩ মে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি ১৭ মে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুসারে ওইদিন এবং গতকার সৈামবার আবেদনটির ওপর শুনানি হয়।৮ মে হাইকোর্ট রাজীবের খালা জাহানারা পারভীন ও রাজীবের গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের ছেলে কাস্টমস কর্মকর্তা ওমর ফারুকের নামে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি যৌথ হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই হিসাবে একমাসের মধ্যে দুই বাস কর্তৃপক্ষ ২৫ লাখ করে মোট ৫০ লাখ টাকা জমা দেবেন। টাকা জমা দেয়ার পর আগামী ২৫ জুনের মধ্যে আদালতকে দুই কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে বিষয়টি জানাবেন। ২৫ জুন এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। ওইদিন বাকি ৫০ লাখ টাকা দেয়ার বিষয়ে নির্দেশ আসতে পারে বলেও জানান ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
আইনজীবীরা জানান, এখন হাইকোর্ট স্থগিত হওয়ায় ওই ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে না বাস মালিক কতৃপক্ষকে। তবে আপিল বিভাগের আদেশ অনুযায়ি গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি পূনরায় নির্ধারিত হবে।সূত্র: বাসস