• ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শাবিতে এসে শিক্ষার্থীকে মারধর করায় ভাই-বোন জেলহাজতে

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ৭, ২০১৬

শাবি প্রতিনিধি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ভাই-বোনকে জেলহাজতে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অভিযুক্ত ভাই-বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী। উভয়ের বাড়িই সিলেটের হবিগঞ্জ জেলায়।
এ ঘটনায় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে ক্যাম্পাসে এসে নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ঐ ছাত্রীকে হল থেকে ডেকে নিয়ে যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী কাওসার আহমেদ। এসময় তার সাথে তার বোন ফাতেমা আক্তার (ছদ্মনাম)ও ছিলো। ফাতেমাও (ছদ্মনাম) চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব এডুকেশন, রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং এর তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাদের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলায়। ক্যাম্পাসে এসে তারা শাবির ঐ শিক্ষার্থীকে হল থেকে ডেকে এনে রিকশায় তুলে মারধর শুরু করে। অন্য একটি রিকশায় থাকাকালে বিষয়টি লক্ষ্য করেন গণিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিম। এসময় তিনি রিকশা থামিয়ে মারধরের কারণ জিজ্ঞেস করলে কাওসারের বোন চেঁচিয়ে উঠে ড. সাজেদুল করিমকে ‘এটা তাদের পারিবারিক ব্যপার। এ বিষয়ে নাক না গলাতে’ অনুরোধ করেন।
অন্যদিকে রিকশায় থাকা অপর মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে ড. সাজেদুল করিমের সন্দেহ হয়। তিনি এসময় গার্ডদের সহযোগীতায় কাওসার ও তার বোনকে প্রশাসনিক ভবন-২ এ ভিতরে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এসময় কাওসার দৌড় দিয়ে পালিয়ে যেতে চাচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন ড. সাজেদুল করিম।
পরবর্তীতে বিষয়টি তিনি প্রক্টরিয়াল বডি, শিক্ষক সমিতি ও জালালাবাদ থানা পুলিশকে অবহিত করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একেকসময় একেককথা বলে বিষয়টিকে উল্টোদিকে ঘুরানোর চেষ্টা করে কাওসার ও তার বোন।
সব বিষয় স্বীকার করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. রাশেদ তালুকদার জানান, কাওসার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে মাস্টার্স শেষ করেছে বলে আমাদের জানিয়েছে। শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে জালালাবাদ থানা পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। তবে অভিযুক্ত কাওসার ঐ শিক্ষার্থীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক আছে বলে পুলিশকে অবহিত করেন। মনোমালিণ্যের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্বীকার করেন প্রশাসনের কাছে।
পুলিশ যখন কাওসারকে গাড়িতে তুলে নিচ্ছিল তখন বাইরে অপেক্ষারত বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা কাওসারকে মারতে উদ্যত হয়। এসময় মারধরের হাত থেকে রক্ষা করতে গেলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন, শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি সৈয়দ সামসুল আলমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক লাঞ্ছনার শিকার হন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সিনিয়র শিক্ষকরা।
এসময় জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে, কিন্তু তারা যদি এ ধরনের ব্যবহার করে তাহলে কিছু বলার নাই। আমাদের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত তাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করা।’
পরবর্তীতে জালালাবাদ থানা পুলিশ তাদেরকে থানায় নিয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত, শাবির ঐ শিক্ষার্থী থানায় তার লিখিত বক্তব্য দিচ্ছিলেন। লিখিত বক্তব্য আমলে নিয়ে জালালাবাদ থানা পুলিশ মামলাসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।