• ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

অবৈধ প্রক্রিয়ায় রাগীব আলীর সম্পদ আত্মসাত : অতঃপর ১৪ বছরের কারাদন্ড

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক::::  মানবিক মুখোশ পরে অবৈধ প্রক্রিয়ায় জনসম্পদ আত্মসাতের বিরুদ্ধে এক উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতি মামলায় দেওয়া এই রায়।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মোঃ সাইফুজ্জামান হিরো রায় ঘোষণার সময় আদালতের পর্যবেক্ষণে এ উক্তি করেন।
আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই অর্থবিত্তে বলিয়ান দেশের অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি। এই ধরনের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বর্তমান বাংলাদেশে তাদের অবৈধ প্রভাবকে ব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক ডকুমেন্টকে জালিয়াতিমূলে সৃষ্টি করে সৃষ্ট জালিয়াতি কাগজপত্র প্রতারণামূলকভাবে খাঁটি হিসাবে ব্যবহার করে, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই রায়’।


রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে সিলেটের তৎকালীন সহকারি কমিশনার (ভূমি) কোতয়ালী থানায় একটি স্মারক জালিয়াতি মামলা দায়ের করেন। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন এবং প্রসিকিউশন টিম এই মামলায় আনা অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

২০০৯ সালে এ মামলায় স্থগিতে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন রাগীব আলীর ছেলে আব্দুল হাই। মামলার পর্যবেক্ষণে আদালত উল্লেখ করেন, এ রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রীমকোর্ট যেসব পর্যবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন ঐ সব পর্যবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্তের আলোকে রাষ্ট্রপক্ষ আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

এ মামলার রায়ে আদালত রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই এর বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ এবং জালিয়াতি ও সরকারি কাগজ জাল করে হাজার কোটি টাকার দেবোত্তর সম্পত্তি তারাপুর চা বাগান দখলের অভিযোগে ৪৬৬/৪৬৮/৪৭১/৪২০ ও ৩৪ ধারায় দুই আসামির প্রত্যেককে পৃথকভাবে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

মামলার রায় ঘোষণার পর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, রাগীব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাইয়ের মত প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ঘোষিত এ রায় একটি ঐতিহাসিক রায়। এ রায়ে প্রমাণিত হয়েছে তারাপুর চা বাগান দখলের ঘটনা একটি মহা জালিয়াতির ঘটনা। এ রায়ে প্রমাণ হয়েছে দেশের বিচারবিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন।