• ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৯শে রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

অবশেষে মুক্তি পেলেন সেই ভুট্টো

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মে ১৭, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : একটি হত্যা মামলায় অন্যজনের সাজা নিজে ভোগ করা রিপন ভুট্টো অবশেষে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। এর আগে বিকেলে রিপন আহমদ ভূট্টোকে হত্যা মামলা থেকে খালাসের আদেশ দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল হোসেন। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে ভুট্টোকে হত্যা মামলা থেকে খালাস দেন আদালত। এই আদেশ কারাগারে এসে পৌছার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। অন্যজনের শাস্তি নিজে ভোগ করার প্রতারণায় ভুট্টোর বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সুপারিশে প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। সেই মামলায়ও ভুট্টো জামিনে রয়েছেন বলে জানান ছগির মিয়া। জানা যায়, ২০০৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর সিলেট নগরী থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন আলী আকবর সুমন (২৪)। পরদিন মোগলগাঁও ইউনিয়নের হাউসা গ্রামের পাশে ঝিলকার হাওরে কচুরিপানার নিচে তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় নিহতের ছোট ভাই আলী আহসান সুহেল বাদী হয়ে মামলা করেন। শুনানি শেষে ২০১২ সালের ২০ জুন আলোচিত ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক দিলীপ কুমার দেবনাথ। মামলার চার্জশিটভুক্ত ৯ আসামির মধ্যে তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন আদালত। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন হাউসা গ্রামের মৃত মছকন্দর আলীর ছেলে দরাছ মিয়া ওরফে গয়াছ ও তার স্ত্রী রুজিনা বেগম এবং একই গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. ইকবাল হোসেন বকুল। সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামিই পলাতক ছিলেন। ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর রিপন আহমদ ভুট্টো আদালতে হাজির হয়ে নিজেকে ইকবাল হোসেন বকুল দাবি করেন। আদালতের নির্দেশে এরপর থেকে তিনি কারাগারেই রয়েছেন। তবে আত্মসমর্পণের এক বছর ২ মাস পর বেরিয়ে আসে মূল সত্য। যে বকুল কারাগারে রয়েছেন, তিনি আসল বকুল নন। তার আসল পরিচয় ভুট্টো। আর মূল আসামী ইকবাল হোসেন বকুল বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। সাজাভোগের ১৪ মাস পর বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসলে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হান্নানকে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমেদ পাটোয়ারী। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ২২ জানুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমেদ পাটোয়ারী হত্যা মামলা থেকে রিপন আহমদ ভূট্টোকে অব্যাহতি দিয়ে তিনিসহ চারজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন। প্রতিবেদন হাতে পেয়ে শনিবার কারাগার পরিদর্শন করলেন জেলা ও দায়রা জজ। তার সাথে ছিলেন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আব্দুল হান্নান। শনিবার কারা ফটকে জেলা ও দায়রা জজ বলেন, তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ভুট্টোর বিষয়ে রোববার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এই ঘটনার সাথে যে বা যারা জড়িত ছিলেন তারা কেউ রক্ষা পাবেন না। আদালত চায় না কোন নিরপরাধ কারাগারে যাক। তাছাড়া একজনের বদলে অন্যজন সাজা কাটবে এমন কোন সিস্টেমও নেই। এমনকি কেউ ইচ্ছা করলেও তা করতে পারবে না। এই ঘটনায় যারা প্ররোচনা দিয়েছেন তাদেরকেও রেহাই দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।