• ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সিলেটে পরিবহন সেক্টরে পুলিশের চাঁদাবাজি, পরিবহন ব্যবসায়ীরা অসহায়

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ১৫, ২০১৮

আব্দুল হালিম: সিলেটে দীর্ঘদিন থেকে পরিবহন সেক্টরে চলছে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানা থাকলেও তারা বিষয়টি তেমনভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। পুলিশের এমন চাঁদাবাজির কারণেই পরিবহন ব্যবসায়ীরা অসহায় পড়েছেন। ভুইফোঁড় বিভিন্ন নামে চাঁদাবাজি করছে পুলিশ। সড়ক, মহাসড়ক, বাস-ট্রাক টার্মিনাল ও স্ট্যান্ডে পুলিশের নিয়োগকৃত লাইনম্যান চাঁদাবাজি করছে প্রকাশ্যেই। সিলেট পরিবহন সেক্টরকে অবৈধ চাঁদাবাজিমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা বহুদিন ধরে সর্বমহলে অনুভূত হলেও আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ীন। সম্প্রতি পুলিশের চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র পরিবজন শ্রমিকদের সাথে মারামারি, হাঙ্গামা, ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে হতাহতের ঘটনাও কোনো অংশে কম হয়নি। যাত্রী ও মালামাল পরিবহন সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ করার জন্য অবিলম্বে পুলিশের বেপরোয়া অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ সত্য কথাটা সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের অজানা থাকার বিষয় নয়, যাত্রী ও মালামালবাহী যানবাহনে যে চাঁদাবাজি হয়, তার খেসারত দিতে হয় মূলত যাত্রীদের ও পণ্যের ক্রেতা-ভোক্তাদের। পুলিশের চাঁদাবাজির ফলে পরিবহন মালিকরা ইচ্ছামতো বাস ভাড়া ও ট্রাক-কন্টেইনার ক্যারিয়ারের ভাড়া বাড়িয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই সিলেটের বিভিন্ন পরিবহনে ভুইফোঁড় সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে প্রায় ৩বছর থেকে। প্রতিদিন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কদমতলি এলাকার বাসস্ট্যান্ট থেকে পুলিশের অবৈধ আয় হয় প্রায় ২লাখ টাকা। মাস শেষে স্থানীয় থানা ও ফাঁড়ি পুলিশ তাদের ভাগের টাকা রেখে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে খামেকরে টাকা গুলো দিয়ে আসেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, সিলেটের ১৩টি উপজেলায় পুলিশের ৫০জন লাইনম্যান প্রতিদিন যানবাহন থেকে টাকা উত্তোলন করে আসছে। পুলিশকে চাঁদা না দিলে পুলিশ যানবাহন থেকে যাত্রী নামিয়ে রেকার (জব্দ) করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের অহেতুক এমন নৈরাজ্যের কারণে পরিবহন ব্যবসায়ীরা মুখ খুলে প্রতিবাদ করছেন না। কারণ প্রতিবাদ করলেই তাদেরকে পুলিশ নানা ধরনের মামলায় জড়ানোর পাশাপাশি নানাভাবে হয়রানি করে থাকে। এমনকি ব্যবসায়ীদেরকে পরিবহন ব্যবসা থেকেও পুলিশ সরে যেতে হুমকি দেয়।  শুধু তাই নয় মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানার ওসি আক্তার হোসেন পরিবহন সেক্টর নিয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ কিংবা পত্রিকায় প্রতিবেদন করলে তাকে মামলাসহ নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন।
সিলেট জেলা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ফলিক মিয়া জানান, পরিবহন ব্যবসা করে যাচ্ছি শুধু নামেই। আমরা পুলিশের চাঁদাবাজির কারণে একেবারেই অতিষ্ঠ। অভিযোগ করলে হয়রানি করা হয়। যার কারণেই পুলিশকে তাদের নিযুক্ত লাইনম্যানের কাছে চাঁদা দিয়েই সিলেটে পরিবহন ব্যবসা করে যাচ্ছি।