• ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সাইফুর রহমানের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

sylhetsurma.com
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক::::: সাবেক অর্থমন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমানের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বরেণ্য রাজনীতিবিদ ও খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ এম সাইফুর রহমানের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পারিবারিক ও দলীয়ভাবে কর্মসূচি পালন করা হবে। এ উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাণীতে তিনি বলেন, দেশের স্বনামধন্য সাবেক অর্থমন্ত্রী, বরেণ্য রাজনীতিবিদ এম সাইফুর রহমানের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমি তার আত্মার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এম সাইফুর রহমান ছিলেন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি সব সময় থেকেছেন সামনের কাতারে।
সাইফুর রহমানের জন্ম ১৯৩২ সালের ৬ই অক্টোবর, মৌলভীবাজারের বাহারমর্দনে। তার পিতা মোহাম্মদ আবদুল বাছির, মাতা তালেবুন নেছা। ৩ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তিনি। মাত্র ৬ বছর বয়সে তার পিতা মারা যান। সে সময় তার অভিভাবকক্ত গ্রহণ করেন চাচা মোহাম্মদ সফি। শিক্ষাজীবন, গ্রামের মক্তব ও পাঠশালা শেষ করে তিনি ১৯৪০ সালে জগৎসী গোপালকৃষ্ণ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এরপর ১৯৪৯ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে মেট্রিকুলেশনে উত্তীর্ণ হন। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে আইকম পাস করে ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য লন্ডনে চলে যান। সেখানে পৌঁছার পর মত পাল্টে যায় তার। ব্যারিস্টারির পরিবর্তে পড়েন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি। ১৯৫৩-৫৮ সময়কালে পড়াশোনার পর ১৯৫৯ সালে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ফেলোশিপ অর্জন করেন। এছাড়া তিনি আর্থিক ও মুদ্রানীতি এবং উন্নয়ন অর্থনীতিতে বিশেষায়িত শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালের ১৫ই জুলাই বেগম দূররে সামাদ রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ৩ পুত্র ও এক কন্যাসন্তানের জনক। ২০০৩ সালে তার স্ত্রী ইন্তেকাল করেন। এম সাইফুর রহমান ২০০৯ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী বাহারমর্দনে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) প্রতিষ্ঠালগ্নে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তাকে আপন করে ডাকলেন দল গঠনে অংশ নিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিবেদিত হতে। তিনি তাই করলেন। রাজনীতিতে এলেন, আলোকিত করলেন, আলোকিত হলেন। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসন ও ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ ও সিলেট-১ আসন থেকে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালের ৮ই জুন তিনি সংসদে দ্বাদশ বাজেট পেশ করে দেশের সংসদীয় ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক বাজেট পেশকারী হিসেবে রেকর্ড গড়েন। তিনি দীর্ঘদিন দেশের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন ছাড়াও দেশ-বিদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তার জীবদ্দশায় দেশ ও বৃহত্তর সিলেট নিয়ে যে উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা করেছিলেন তার অনেকগুলো বাস্তবায়ন হলেও পুরোটা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। হঠাৎ এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে যায় তার জীবনপ্রদীপ, স্তব্ধ হয়ে যায় তার দেখা উন্নয়ন মহাপরিকল্পনার স্বপ্ন। গতকাল দুপুরে মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে তার জ্যেষ্ঠপুত্র সাবেক এমপি ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান জানান, তার বাবা সবসমই মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পছন্দ করতেন। বৃহত্তর সিলেটে তিনি যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী উন্নয়ন করে গেছেন এটিই তার বড় প্রমাণ। কাজের মাধ্যমেই তিনি মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছিলেন।