• ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন : অস্বীকার সুকির

sylhetsurma.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৬, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক : মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সুকি বিবিসি-কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিধনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে তিনি দেশটির রাখাইন রাজ্যে চলমান সমস্যার কথা স্বীকার করেন। এ বছর প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুকি।
এক বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণ করা সুকি সরকার মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলিমদের দেশটির নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। তারা এদের বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী মনে করে।
রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন বন্ধে মায়ানমার সরকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। তাই গত মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের সদস্যরা দেশটিতে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন তদন্তের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
তিনি বলেন, রাখাইন প্রদেশে যথেষ্ট বৈরিতা ও সংকট রয়েছে। তবে ‘নিধন’ শব্দটি সেখানকার পরিস্থিতির জন্য বেশি কঠিন।
মানবাধিকার রক্ষার দূত ও শান্তিতে নোবেল জয়ী হয়েও নিজ দেশে রোহিঙ্গা নির্মূলে বাধা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন কিনা এমন এক প্রশ্ন এড়িয়ে যান সুকি।
মিয়ানমার সরকার রাখাইন ও বিরোধীদের অপরাধ তদন্তে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানকে প্রধান করে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে।
অক্টোবর মাসে রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে সেনা অভিযান শুরুর পর প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মকর্তাদের জানিয়েছে, মিয়ানমার সৈন্যরা মায়ের সামনে শিশুদের হত্যা করেছে। এতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, রাখাইন প্রদেশে যথেষ্ট বৈরিতা রয়েছে, মুসলমানরাই মুসলমানদের হত্যা করেছে।
সেখানে মানুষের মাঝে নানা বিভক্তি আছে এবং আমরা সেটাই কমানোর চেষ্টা করছি।
দীর্ঘ সাক্ষাতকারে সুকি এই বিষয় নিয়ে তার মতামত তুলে ধরে বলেন, সেখানে অক্টোবরে পুলিশের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করেই সব কিছুর সূত্রপাত। এরপর সামরিক বাহিনী বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করে।
এক প্রশ্নের জবাবে সুকি বলেন, পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে চলে যাওয়া রোহিঙ্গাদের কেউ ফিরে আসতে চাইলে তাদের সাদরে গ্রহণ করা হবে।
এর আগে রাখাইন রাজ্যে মুসলমানদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর হত্যা ও ধর্ষণের মতো মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিরুদ্ধে কিছু না বলে নির্লিপ্ত থাকায় বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হয়েছেন সুকি।
সুকি বলেন, তিনি মার্গারেট থ্যাচার কিংবা মাদার তেরেসা নন। তিনি শুধুই একজন রাজনীতিবিদ।
তবে, তিনি সবকিছু পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘের সাবেক প্রধান কফি আনানকে আবারো রাখাইন রাজ্যে আমন্ত্রণ জানান।
সুকি’র ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) শনিবার দেশব্যাপী উপনির্বাচনে বিপুল সংখ্যক আসনে জয়লাভ করলেও রাখাইনসহ জাতিগত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলোর আসন হারিয়েছে।