• ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সাগরতলে পাঁচ সহস্রাধিক বছরের পুরনো বিষ্ণু ও বুদ্ধ মন্দির! (ভিডিও)

sylhetsurma.com
প্রকাশিত আগস্ট ২৭, ২০১৬

সিলেট সুরমা ডেস্ক::::: হিন্দুধর্মের ইতিহাস ১২ হাজার বছরেরও বেশি পুরনো। একটা সময় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ছাড়িয়ে কম্বোডিয়াতে বিস্তার ঘটেছিল হিন্দুধর্মের। ঠিক এমনি এক বিষ্ণু মন্দিরেরই সন্ধান মিলেছে ইন্দোনেশিয়ার বালির সমুদ্রের তলায়। পদ্মের উপর বসে থাকা বিষ্ণুর মূর্তিও পাওয়া গিয়েছে এখানে। শুধু তাই নয়, ধ্যানমগ্ন বুদ্ধের মূর্তিও রয়েছে এখানকার পানির নিচে। সেইসঙ্গে রয়েছে এক বুদ্ধ মন্দির।
ইন্দোনেশিয়ার বালির উপকূল ঘেঁষা পেমুটেরান গ্রাম। এখানেই সমুদ্রের তলায় খোঁজ মিলেছিল এক প্রাচীন বিষ্ণু মন্দিরের। পুরো এলাকাটাকেই ঘিরে রেখেছে এক পাথরের দেওয়াল। যা দেখে মনে হতেই পারে এখানে একটা সময় বিশাল বাগানও ছিল এখানে। পানির নিচে থাকা এই বিষ্ণু এবং বুদ্ধ মন্দির দর্শন করতে ডুবরির পোশাক পরেই নামতে হয়। বর্তমানে এলাকাটিতে স্কুবা ডাইভিং চালু করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য। ফি বছরই প্রচুর সংখ্যক পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন সমুদ্রের তলায় এই বিষ্ণু মন্দিরটি দেখতে।
একটা সময় ইন্দোনেশিয়া ছিল হিন্দুধর্মে প্রভাবিত। ফলে সেখানে হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি বা মন্দির পাওয়া খুব একটা অত্যাশ্চর্য বিষয় নয়। কিন্তু, পানির তলায় বিষ্ণু মন্দির এবং তার সঙ্গে গা লাগিয়ে বুদ্ধমূর্তি থাকাটা আসলেই রহস্যের।

২০০৫ সালে বালি উপকূলের যে পেমুটেরান গ্রামের সমুদ্রের তলায় বিষ্ণু মন্দির এবং বুদ্ধ মন্দিরের খোঁজ মিলেছিল সেখানে এমন ঘটনা ঘটতে পারে না বলেই অনেকে দাবি করতে থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ইতিহাসবিদরা ছুঁটেছিলেন পেমুটেরানে। ভারত থেকেও হিন্দুধর্ম নিয়ে গবেষণাকারীর দল পৌঁছেছিলেন সেখানে। ইন্দোনেশিয়া সরকারও সরকারিভাবে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেদেশের পুরাতত্ত্ব বিভাগও তদন্তে নামে।
দেখা যায় গোটা ঘটনাই সাজানো। সমুদ্রের তলায় ৫ হাজার বছরেরও বেশি পুরনো বিষ্ণু মন্দির এবং বুদ্ধ মন্দির পাওয়া গেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছিল, তা সঠিক নয়। জানা যায়, ‘পরিবেশ রক্ষা’ সংক্রান্ত এক প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে পেমুটেরান গ্রামে সমুদ্রের তলায় একটি ‘রিফ গার্ডেন’ তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যেহেতু ইন্দোনেশিয়ায় হিন্দুধর্মের একটা প্রভাব রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগাতেই বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি ও বুদ্ধমূর্তি সংগ্রহ করে আনা হয়। কিছু দেব-দেবীর মূর্তি প্রাচীন মূর্তির মতো করে বানিয়েও নেওয়া হয়। এমনকী সমুদ্রের তলায় মন্দির ও পাথুরে বাগান যে বসবে, তার সবটাই পানির উপরে তৈরি করা হয়।
এরপর অত্যন্ত দক্ষ স্কুবা ডাইভারদের দিয়ে এগুলো পানির নিচে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে মূর্তি, মন্দির এবং পাথুরে বাগানকে স্থাপন করা হয়। দু’ধাপে এই ‘রিফ গার্ডেন’ পানির নিচে তৈরি করা হয় বলে স্বীকার করে নেন ক্রিস ব্রাউন নামে এক অস্ট্রেলিয়ান। কারণ এই ব্রাউনেরই মস্তিষ্কপ্রসূত ছিল ‘রিফ গার্ডেন’। সমুদ্রের ২৯ ফুট গভীরে এর জন্য আড়াই হাজার স্কোয়ার মিটার জায়গাকে চিহ্নিতও করা হয়েছিল। পর্যটক টানতে তাই ৫ হাজার বছরের বেশি পুরনো মন্দিরের গল্প প্রচার করেছিলেন এই প্রকল্পের পিছনে থাকা পণ্ডিতেরা।
সাগরতলে পাশাপাশি পাঁচ সহস্রাধিক বছরের পুরনো বিষ্ণু ও বুদ্ধ মন্দিরের ভিডিও: