• ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

প্রবেশ নিষেধ! তাজমহলের সেই ২২ বন্ধ ঘর…

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২১, ২০১৭

আপনার নিশ্চয়ই বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের সবক’টিকে মনে নেই, কিন্তু তাজমহলকে আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে। এই অসাধারণ সৌধটি ভারতের গর্ভ, এর পিছনে যে গল্প আছে তা অসংখ্য মানুষকে আবেগতাড়িত করে দেয়।

কিন্তু আপনার কি মনে হয় এই দৈত্য আকৃতির সৌধটির গল্প মানে শুধুই অসাধারণ স্থাপত্য কলা এবং অসাধারণ সুন্দর সুন্দর বাগান? না একবারেই নয়। শাহ জাহান এবং মুমতাজের অমর প্রেমকাহিনী ছাড়াও এর একটা রহস্যজনক গল্প আছে। এই গল্প হচ্ছে তাজমহলের ভিতর কিছু রহস্যজনক ঘরের, যেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ। আপনি কৌতূহলী হচ্ছেন নিশ্চয়ই?
এই ঘরগুলো আবিষ্কারের পরই লোকের মুখে মুখে বিভিন্ন জনশ্রুতি ছড়িয়ে পড়ে। তাজমহলের দর্শনার্থীরা এই ঘরগুলো সম্পর্কে খুবই উৎসাহিত হয়ে পড়ে এবং তারা এই ঘরগুলোকে খুঁজে দেখবার চেষ্টা করে এবং নিজেদের মতো করে গুজব ছড়াতে থাকে। কিন্তু আরো যেটা অদ্ভুত সেটা হলো সরকার এই ঘরগুলোতে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ করে এগুলোকে সিল করে দিয়েছে কেন? আমরা বরং এই ঘরগুলো সম্পর্কে যে যে জনশ্রুতি ছড়িয়েছে সেগুলো নিয়ে অলোচনা করি।

১। গোপন তোরণ যার ভেতর ১০৮৯টি কক্ষ থাকতে পারে। বলা হয় যে ওই অন্ধকারাচ্ছন্ন দালানগুলোর দিকে যদি আপনি ভালো করে পরীক্ষা করেন, তাহলে দেখবেন যে ওখানে যে তোরণ এবং ভেন্টিলেটরগুলো আছে সেগুলো অন্য আয়তনের মার্বেল দিয়ে বন্ধ করা আছে।

এই তোরণগুলো নাকি এক সিঁড়িতে আপনাকে নিয়ে যাবে যেগুলো আপনাকে অনেক গোপন ঘরের সন্ধান দেবে।
১.১। গোপন তোরণ যেখানে আপনার যাওয়ার সাহস হবে না। আপনি কেন এ রকম অন্ধকার ঘরে যেতে চাইবেন? এখানে এ রকম অনেক সিঁড়ি আছে যেগুলো আপনাকে তাজমহলের নিচে কিছু গুপ্ত ঘরে নিয়ে যাবে যেগুলো এখন ইট পাথর দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

১.২। আপনি কি ভেতরে যেতে চাইছেন? এখানে এ রকম কয়েক হাজার তোরণ আছে আর এগুলো প্রত্যেকটারই আলাদা কিছু অজানা গল্প আছে।

২. মমতাজের কবরের পাশে কিছু লুকানো আছে। আমরা সবাই জানি যে এখানে নদীর তীরে মমতাজের কবর আছে। কিন্তু লোকে যেটা জানে না সেটা হলো এই নদীর পাশে দুইতলা উঁচু একটা মার্বেলের কাঠামো লুকানো আছে। কিন্তু এটা এভাবে লুকিয়ে রাখার কারণ কি?

৩। গোপন ধর্মীয় দিক। আর একটা জনশ্রুতির প্রচলন যেটা আছে সেটা হলো, হিন্দুদের মত অনুসারে তাজমহল হলো আসলে পুরানো একটা শিব মন্দির। শাহজাহান তাই মার্বেল দিয়ে এই মন্দিরের সব অংশ ঢেকে দিয়েছেন যাতে শিব মন্দিরের কোনো অংশ চোখে না পড়ে।

৩.১। হিন্দু মন্দির হওয়ার প্রমাণ। এই স্তম্ভগুলো আগে হিন্দু দেব-দেবীতে ভর্তি ছিল।

৩.২। কিছু হিন্দু সংযোগ। এটা বলা হয় যে আসলে ১০৮৯টা ঘর নয়, ২২টা বন্ধ ঘরের অস্তিত্ব আছে। এই ঘরগুলোতে শাহজাহান সমস্ত হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তি এবং ছবি লুকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এখানে যে প্রশ্নটা ওঠে তা হলো শাহজাহান এ রকম করবেনই বা কেন?

৩.৩। শাহজাহান সব কিছু লুকিয়ে রেখেছেন। এই স্তম্ভগুলো হিন্দু দেব দেবীর মূর্তিতে ভর্তি ছিল।

৪। মানুষ সব গুজব বন্ধ করে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে ভেবে দেখছে। যদি অপার্থিব কার্যকলাপকে বিজ্ঞান ধরতে পারে তাহলে এটাই বা বুঝতে পারবে না কেন? মানুষ এগুলোকে সাধারণ বুদ্ধি খাটিয়ে ধরার চেষ্টা করছে। এই তোরণগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কারণ হতে পারে যে এই গুপ্ত চেম্বারগুলো মার্বেল দিয়ে তৈরি যা কার্বন-ডাই-অক্সাইডের (মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের) সাথে বিক্রিয়া ঘটিয়ে ক্যালসিয়াম কারবোনেটে পরিণত হয়।

৪.১। মার্বেল বিক্রিয়া করে এই রূপ ধারণ করে। যদি ঘরগুলোকে আমাদের জন্য এখন খোলা হয় তাহলে আমরা মার্বেলের দেয়ালগুলোকে এ রকম দেখব। নিচে নামাতে থাকুন এবং তাজমহলের গুপ্ত ঘরের এ রকম অনেক ছবি দেখতে পাবেন।

৫। মি. ওক এর বক্তব্য
মি. ওক তাজমহল সম্পর্কে একটা অদ্ভুত গল্প শুনিয়েছেন, আওরঙ্গজেব নাকি তাজমহলকে তার আসল মালিক রাজা মান সিংহ এর নাতি জয় সিংহ এর কাছ থেকে কিনেছিলেন, মমতাজের কবরস্থল নির্ধারিত হওয়ার পরে।

৫.১। বিশ্বাস করুন বা নাই করুন। আর এক লেখক ড. গডবোলে বলেছেন যে তাজমহল আসলে শাহজাহান তৈরি করেননি, এটা রাজা মান সিংহ এর প্রসাদ ছিল।

৬। কিছু মানুষ কোনো কিছু বিশ্বাস করে না। অনেকে বলে থাকেন যে ঘরগুলো বন্ধ করে রাখার কারণ হলো ঘরগুলো ফাঁকা ছিল।

৭। আপনি এই ছবিতে গুপ্ত দরজা দেখতে পাবেন। এই গুপ্ত দরজা যা স্তম্ভগুলোর সাহায্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা আপনাকে ওই গুপ্ত ঘরগুলোতে নিয়ে যাবে।

৮। সত্যি না মিথ্যা? আমরা জানি না আসল সত্যি কি, তবে এই গুপ্ত ঘরগুলোর যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা আজ পর্যন্ত ইতিহাসে কেউ দিতে পারেনি।

কালের কণ্ঠ